বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই: ডব্লিউএফপির বাংলাদেশপ্রধান

সচিবালয়ে আজ কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কালপেল্লি
ছবি: কৃষি মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডমেনিকো স্কালপেল্লি বলেছেন, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কোনো রকম আশঙ্কা নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশসহ সব দেশকেই আগামী বছর খাদ্য নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বের সব দেশকেই গরিব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে ডমেনিকো স্কালপেল্লির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। বৈঠকে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ওই বৈঠকেই ডব্লিউএফপির এদেশীয় প্রধান কথাগুলো বলেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রীও ডমেনিকো স্কালপেল্লির এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আমন উৎপাদিত হবে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না। তিনি বলেন, ‘সারা দেশ থেকেই আমনের বাম্পার ফলনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমন একটি মূল ফসল। আমরা মনে করেছিলাম, শ্রাবণ মাসে মাত্র এক দিন বৃষ্টি হয়েছে, কৃষকেরা হয়তো ধান লাগাতেই পারবেন না। উৎপাদন কমে যাবে। কিন্তু এই প্রতিকূলতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।’

মন্ত্রী বলেন, অনেক নিচু এলাকায় অন্য বছর ধান লাগানো যেত না। কারণ, বিল পানিতে ডুবে যায়। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় এই বিলের বা নিচের জমিতেও ধান লাগিয়েছেন অনেকে। সবাই বলছেন যে স্মরণকালে সবচেয়ে ভালো ধান হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনুমান করছে, পৃথিবীতে একটি খাদ্যসংকট হওয়ার আশঙ্কা আছে। এটাকে বিবেচনায় নিয়েই সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দূরদর্শী। তিনি আমাদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বলেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ও গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সহযোগিতা করছে। ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গাদের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন, সেটিও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমেই দেওয়া হয়।’

মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলছে, আন্দোলন–সমাবেশ করে সরকারের পতন ঘটাবে, শেখ হাসিনা পালানোর জায়গা পাবেন না, পালানোর রাস্তা পাবেন না। শেখ হাসিনা কি পালান? উল্টো দেশে আসেন। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে দেশে আসতে দেবে না, আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে চাপ প্রয়োগ করি। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসেছেন। বঙ্গবন্ধুও কোনো দিন এ দেশ থেকে পালিয়ে যাননি।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন বিএনপি বলছে, শেখ হাসিনা পালানোর রাস্তা পাবেন না। সরকারের কেউ পালাবেন না। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে এবং ইনশা আল্লাহ, জনগণকে নিয়ে রাজনৈতিকভাবেই যত হুমকি আসুক, আমরা সেটা মোকাবিলা করব।’