ইন্টারনেট–সেবা বন্ধের তালিকায় বাংলাদেশ ১১তম

ইন্টারনেট–সেবা বন্ধের প্রতীকী ছবি

ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের দিক থেকে ২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে খারাপ বছর। সহিংসতা, যুদ্ধাপরাধ ও গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ এবং অন্যান্য নৃশংসতা দমন করতে বিভিন্ন দেশের সরকার ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করেছিল। এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১১তম। ভিন্নমত দমনে বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়। নিউইয়র্কভিত্তিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেস নাউ ও ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে কাজ করা প্ল্যাটফর্ম কিপইটঅন কোয়ালিশন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

আজ বুধবার তারা ‘সংকুচিত গণমাধ্যম, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৯টি দেশের সরকার অন্তত ২৮৩ বার ইন্টারনেট–সেবায় বাধা দিয়েছে, যা লাখ লাখ মানুষের অধিকারকে খর্ব করেছে।

অ্যাকসেস নাউ ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। তারা বলছে, ২০২৩ সাল ছিল এযাবৎকালের সবচেয়ে বাজে বছর। ২০২২ সালের তুলনায় এ বছর ইন্টারনেট–সেবা বন্ধের ঘটনা ৪১ শতাংশ বেড়েছে।

ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধে ভারত টানা ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে আছে। ২০২৩ সালে ভারতে ১১৬ বার, মিয়ানমারে ৩৭, ইরানে ৩৪, ফিলিস্তিনে ১৬, ইউক্রেনে ৮, পাকিস্তানে ৭, ইরাকে ৬, আজারবাইজানে ৫, ইথিওপিয়া ও সেনেগালে ৪ বার করে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করা হয় দেশের বাইরে থেকে।

বাংলাদেশে ২০২২ সালে ছয়বার ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ রাখা হয়। ওই বছর ৩৫টি দেশের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর গত বছর বাংলাদেশ তিনবার ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ রেখে ৩৯টি দেশের মধ্যে ১১তম অবস্থানে আছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সরকার রাজনৈতিক ও নির্বাচনী পরিস্থিতি ঘিরে বিক্ষোভের সময় ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছিল। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার ২০২৩ সালে যে তিনবার ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে, তা রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন ও বিরোধী দলগুলোর সমাবেশের সময়।

বাংলাদেশে গত বছরের ১২ ও ২৮ জুলাই এবং ২৮ অক্টোবর মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে সরকার। সেবা বন্ধ রাখা এলাকাগুলো হচ্ছে রাজধানীর নয়াপল্টন, কাকরাইল ও গুলিস্তান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিন্নমত দমনের জন্য ১৫টি দেশে ৬৩ বার ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ রাখা হয়। এ তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। এ ছাড়া বারবার সেবা বন্ধ রাখার তালিকায়ও বাংলাদেশের নাম রয়েছে।