ড. ইউনূসের গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর মুনাফা পাওয়ার দাবি বিষয়ে স্থিতাবস্থা

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীর শ্রমিককল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার দাবি বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে সাবেক কর্মীদের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আজ রোববার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আবেদনকারীদের নিয়মিত লিভ টু (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতেও বলা হয়েছে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ কল্যাণের চেয়ারম্যান। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিককল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা পাওয়ার অধিকারী বলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে সাবেক কর্মীরা আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে ১০৬ কর্মীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী গোলাম রাব্বানী শরীফ। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।

পরে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাবেক ১০৬ কর্মীর মুনাফা পাওয়ার দাবির বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। ফলে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা আপাতত থাকছে না। আপিল বিভাগে শুনানির মধ্য দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আইনগতভাবে সঠিক কি না, তা নির্ধারিত হবে।’

গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মী শ্রমিককল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল থেকে মুনাফা (২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত) পেতে শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা (ব্যাখ্যামূলক) করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ এপ্রিল শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৩১ মে হাইকোর্ট রুল দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ছয় মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। রুলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সাবেক ১০৬ কর্মী আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেন। পাশাপাশি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। ১০ জুলাই আপিল বিভাগ এ-সংক্রান্ত রুল হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।