পাকিস্তান, উগান্ডার চেয়ে ‘অসুখী’ বাংলাদেশ

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০১২ সালের ১২ জুলাই আজকের দিনটিকে সুখ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সুখ এবং ভালো থাকাকে একটি সর্বজনীন লক্ষ্য ও প্রত্যাশা নিয়েই দিবসটির উৎপত্তি।

টানা ষষ্ঠবারের মতো সুখী দেশের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ফিনল্যান্ডছবি: রয়টার্স

আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের প্রকাশিত সুখী দেশের তালিকায় পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও উগান্ডার পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের নাম। আজ সোমবার জাতিসংঘ ওই তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় ১৩৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮তম।

১ম
তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ফিনল্যান্ড। আগের পাঁচবারও এই তালিকায় শীর্ষে ছিল এই দেশটি

এই তালিকায় গতবার বাংলাদেশ ছিল ৯৪তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশ শুধু ভারতের ওপরে রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের অবস্থান ১২৬তম। আর নেপাল (৭৮), পাকিস্তান (১০৮) ও শ্রীলঙ্কা (১১২) এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের চেয়ে। আর তালিকার একেবারের তলানির দেশ আফগানিস্তান (১৩৭তম); অর্থাৎ আফগানিস্তান সবচেয়ে অসুখী।

শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়েও বাংলাদেশ ‘অসুখী’। যেমন গিনি (৯১), আইভরি কোস্ট (৯৩), ক্যামেরুন (৯৬), সেনেগাল (১০২), ঘানা (১০৭) ও উগান্ডা (১১৩) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারও (১১৭তম)।

গত পাঁচবারের মতো এবারও সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড। চতুর্থ ইসরায়েল ও পঞ্চম নেদারল্যান্ডস। শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে এরপর আছে যথাক্রমে সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ ও নিউজিল্যান্ড।

সর্বশেষ ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট-২০২৩-এ দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচবারের মতো এবারও সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড। চতুর্থ ইসরায়েল ও পঞ্চম নেদারল্যান্ডস। শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে এরপর আছে যথাক্রমে সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ ও নিউজিল্যান্ড।

১১৮
জাতিসংঘের প্রকাশিত তালিকায় ১৩৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮তম। গত বছর এই তালিকায় বাংলাদেশ ছিল ৯৪ তম

এবার সুখী দেশের তালিকায় কানাডা ১৩, যুক্তরাষ্ট্র ১৫ ও যুক্তরাজ্য ১৯তম অবস্থানে রয়েছে। যুদ্ধকবলিত ইউক্রেন রয়েছে ৯২তম অবস্থানে। আর রাশিয়া আছে ৭০তম অবস্থানে। এ ছাড়া এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুর রয়েছে সবার ওপরে, ২৫তম। মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে সুখী দেশে সংযুক্ত আরব আমিরাত (২৬)।

ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে বাংলাদেশ ১১৮তম
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০১২ সালের ১২ জুলাই আজকের দিনটিকে সুখ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সুখী এবং ভালো থাকাকে একটি সর্বজনীন লক্ষ্য ও প্রত্যাশা নিয়েই দিবসটির উৎপত্তি। এর পর থেকে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক সুখ দিবসের প্রাক্কালে ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস ইনডেস্ক’ নামে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

জাতিসংঘের সুখী দেশের তালিকা করার ক্ষেত্রে মানুষের সুখের নিজস্ব মূল্যায়ন, সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে শূন্য থেকে ১০ সূচকে নম্বর পরিমাপ করা হয়। পাশাপাশি প্রতিটি দেশের মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রা বিবেচনায় নেওয়া হয়।

শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়েও বাংলাদেশ ‘অসুখী’। যেমন গিনি (৯১), আইভরি কোস্ট (৯৩), ক্যামেরুন (৯৬), সেনেগাল (১০২), ঘানা (১০৭) ও উগান্ডা (১১৩) বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

২০২২ সালে; অর্থাৎ সর্বশেষ সুখী দেশের তালিকা করতে গিয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে করোনা মহামারিকে। করোনা সারা বিশ্বকে এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে কোভিড-১৯ মানুষের ভালো থাকার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে বেকারত্ব। এর প্রভাব পড়েছে সূচকেও।

টানা ষষ্ঠবারের মতো তালিকার শীর্ষে ফিনল্যান্ড
ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়া বিশ্ব মহামারির ধাক্কা সামলানোর আগে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধ সারা বিশ্বকে এক ভয়াবহ সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতি। দেশে দেশে বেড়েছে খাবার-জ্বালানিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। এবারের সুখের সূচকে ইউক্রেন যুদ্ধেরও প্রতিফলন দেখা গেছে।

আরও পড়ুন