বেসিক ব্যাংকের চার কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণ করতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে করা পৃথক মামলায় ব্যাংকের চারজন সহকারী মহাব্যবস্থাপককে (এজিএম) ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের আইনি কার্যধারা গ্রহণে কোনো বাধা নেই।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে করা পৃথক মামলায় ব্যাংকের চারজন এজিএম হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে ৩ আগস্ট হাইকোর্ট তাঁদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। ওই চারজন হলেন প্রধান কার্যালয়ের সাদিয়া আক্তার শাহীন ও জালাল উদ্দিন, গুলশান শাখার রুমানা আহাদ এবং মতিঝিল লোকাল অফিসের এ এস এম আনিসুর রহমান।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক, যা ৯ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন, দুদককে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এরপর দুদক পৃথক লিভ টু আপিল করে, যা আজ শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। চার কর্মকর্তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম মাছুম, তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী নাহিয়ান ইবনে সোবহান।

পরে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণ করতে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে দুদক প্রয়োজন মনে করলে তাঁদের আটক করতে পারবে। তাঁদের ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের আইনি কার্যধারা গ্রহণে কোনো বাধা নেই।’

‘বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি: অনেকেই পালিয়ে গেছেন’ শিরোনামে গত ১৪ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ৫৯টি মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুত হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বরাত দিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাংক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সার্ভেয়ার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নাম উল্লেখ করা হয়। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০টি মামলা নিয়ে আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন ওই চার কর্মকর্তা। ২০টি মামলার মধ্যে সাদিয়া আক্তার ২০টিতে, রুমানা আহাদ ১৩টিতে এবং জালাল উদ্দিন ও আনিসুর রহমান ১৮টি মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

এদিকে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৮ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯ আগস্ট পৃথক আবেদন করেন। তবে আবেদনগুলো আজ সোমবার পর্যন্ত হাইকোর্টের বেঞ্চে জমা দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

জানতে চাইলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুল হাই বাচ্চু ও তাঁর করা আবেদনগুলোর কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। যতটুকু জেনেছি, এখনো কোনো বেঞ্চে আবেদনগুলো জমা দেওয়া হয়নি।’