তাঁরা তাকান সুদূর পশ্চিমে: সুশীল সমাজ নিয়ে আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচন প্রশ্নে নাগরিক সমাজের ভূমিকার সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কিছু মানুষ যাঁরা নিজেদের সুশীল সমাজ বলে মনে করেন। তাঁরা নিজেদের জনগণের অভিভাবক মনে করেন। নানা নির্দেশনা দেন। তাঁরা দেশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিমে তাকান না। তাঁরা তাকান সুদূর পশ্চিমে। সেখান থেকে যে বাণী আসে, সেভাবে তাঁরা এখানে ছবক দেওয়ার চেষ্টা করেন।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ‘জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন (সংশোধন) বিল-২০২৩’ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এর আগে বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী নাগরিক সমাজের সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন সঠিক হচ্ছে। রুস্তম আলী ফরাজীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বাংলদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম। এ দেশের জনগণই নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবে, সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব কারা করবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হলে সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই নির্বাচন হবে।

অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে যে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে, গত সপ্তাহে তার শুনানি হয়েছে। উচ্চ আদালতের অবকাশ শেষে আবার শুনানি হবে। সেই শুনানিতে এর সমাপ্তি ঘটবে বলে তাঁর বিশ্বাস।

এর আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘আমাদের ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন দরকার। সে জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান আছে। টি এন সেশনের (ভারতের সাবেক সিইসি) মতো একজন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনার থাকবেন, এটা আমরা আশা করি। মেরুদণ্ড সোজা করে তাঁরা নির্বাচন করবেন। সরকার নির্বাচনের সময়ে রুটিন দায়িত্ব পালন করে। এটা নিয়ে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ বারবার জোর করে সংসদকে অকার্যকর, সংসদ চলে না—নানা কথা বলে। এটা হলে তো নির্বাচন লাগে না।’

জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, ভারতের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ কোনো দিন প্রশ্ন করে না। তাহলে আজকের বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন কেন? বাংলাদেশের নির্বাচন সঠিক হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, উচ্চ আদালতের তিনজন বিচারপতিকে দুর্নীতির অভিযোগে দায়িত্ব পালন থেকে অনেক দিন ধরে বিরত রাখা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এই বিষয়টির সুরাহা করা প্রয়োজন।

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, নারীরা অনেক বছর ক্ষমতায়, কিন্তু সবাই তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মতিয়া চৌধুরী কিংবা শিরীন শারমিন চৌধুরী হতে পারবেন না। তিনি সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়ানোর দাবি জানান।

বিল পাস
বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে ‘জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন (সংশোধন) বিল-২০২৩’ কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

বিলে বলা হয়েছে, সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের জামানত হবে ২০ হাজার টাকা। বিদ্যমান আইনে সংরক্ষিত আসন শূন্য হলে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান আছে। সেখানেও সংশোধনী আনা হয়েছে। বিলে আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া নারী আসন বণ্টন পদ্ধতিতেও সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।