চিন্তা প্রতিহত না উন্মুক্ত করে দিতে হয়

মনজুরুল আহসান খানের বই ‘বলা ও না বলা কথা’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে লেখকসহ অতিথিরা
ছবি: সংগৃহীত

সমাজে কোনো চিন্তা ক্ষতিকর মনে হলে তা রোধ না করে উন্মুক্ত করে দিতে হয়। আর চিন্তাকে প্রতিরোধ করতে হয় চিন্তা দিয়েই এবং গণতান্ত্রিক সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা দরকার।  

শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খানের লেখা বই ‘বলা ও না বলা কথা’র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আলোচকেরা এসব কথা বলেন।

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা আদর্শর স্টল না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার–আপনার বিবেচনায় অনেক রকমের চিন্তাই দেশের ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিন্তু এই ক্ষতি প্রতিহত করার উপায় কন্ঠরোধ করা না। যখন ক্ষতিকর চিন্তা সমাজে প্রচার করার চেষ্টা করা হয় তখন চিন্তাকে আরও উন্মুক্ত করে দিতে হয়। একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা।’

মনজুরুল আহসান খানের বইয়ের ‘টার্গেট’ পাঠক কারা তা জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন সিপিবির এই নেতা। তিনি আরও বলেন, এটা শুধু আত্মজীবনীই নয় এখানে তিনি (মনজুরুল আহসান খান) নিজের চিন্তার পরিবর্তনগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি না বলা কথা সব এখানে বলেননি, আভাস দিয়ে গেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, বাংলাদেশে কেন কমিউনিস্টরা নেতৃত্ব দিতে পারল না সে বিষয়টি এই বইতে উল্লেখ আছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তিনি ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। এ ছাড়া বাকশাল সম্পর্কে মজার কিছু তথ্যও আছে। তীক্ষ্ণ ও স্পষ্টভাবে কিছু সত্যকেও তুলে ধরেছেন। এই বই কাজে লাগবে। এ ছাড়া যেগুলো রহস্য রয়ে গেল তা নানা জনের আত্মজীবনীর মধ্য দিয়ে হয়তো উন্মোচিত হবে।

সাংবাদিক আবু সাইদ খান বলেন, একটা গণতান্ত্রিক সমাজে সব মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা উচিত। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে যেভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে তা নিন্দনীয়। বই সম্পর্কে বলেন, নিঃসংকোচে তিনি সব বলেছেন। রাজনীতিতে তিনি আপোস করেননি। কৌশলের খেলায় বামপন্থীরা কীভাবে হারল তা–ও তিনি তুলে ধরেছেন। বইটি দিকনির্দেশনামূলক।

স্টল না পাওয়া নিয়ে নিজের অবস্থানের কথা তুলে ধরে আদর্শের প্রকাশক মাহবুব রহমান বলেন, তিনি নিজের নীতিতে অটল ছিলেন। লেখকের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় প্রকাশকের নৈতিক অবস্থান থাকা দরকার। সমাজে যদি একটা মতই প্রকাশিত ও প্রচারিত হতে থাকে তবে ভিন্নধারার মত পাওয়া যাবে না। চিন্তাকে চিন্তা দিয়েই প্রতিরোধ করতে হয়। চিন্তার প্রতি যে আঘাতের ব্যাপারে নাগরিকদের সচেতন থাকা উচিত। অন্যের মতকে বাধা যারা দেয় তারা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি।