ফেনীতে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন
ফেনীতে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং অপর এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ওসমান হায়দার আজ বুধবার দুপুরে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর গণেশ গ্রামের হাফেজ মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে সফিউল আজম (৫০) ও একই গ্রামের আবদুল মোনাফের ছেলে মো. রাশেদুল ইসলাম (৪৮)। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৪ জানুয়ারি উপজেলার এক নারী (৩০) তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে একটি এজাহার লেখার জন্য সদরের ফরিদ সুপারমার্কেটের দোতলায় ‘আজম কম্পিউটার’–এ যান। এ সময় দোকানমালিক সফিউল আজম বসা ছিলেন। তিনি তাঁর বন্ধু রাশেদুল ইসলামকে মুঠোফোনে ডেকে দোকানে নিয়ে আসেন। এরপর দুই বন্ধু মিলে দোকানের দরজা বন্ধ করে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। এরপর ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাঁকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর বাইরে থেকে দোকানের দরজায় তালা দিয়ে ওই দুজন পালিয়ে যান।
দীর্ঘ সময় পরও বাসায় ফিরে না যাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে ওই নারীকে খোঁজাখুজি শুরু হয়। একপর্যায়ে তাঁর বাবা জানতে পারেন, মেয়ে ওই আজম কম্পিউটারে যাওয়ার পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। পরে তিনি মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ সফিউল ও রাশেদুলকে গ্রেপ্তার এবং দোকানের ভেতর থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করেন। পরে ওই নারীর বাবা থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে সোনাগাজী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক আমজাদ হোসেন দুই আসামি সফিউল ও রাশেদুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় বাদীসহ ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আদালতে সরকারপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ফেনীর সিনিয়র সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ফরিদ আহম্মদ হাজারী। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের পুলিশের মাধ্যমে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী ন্যায়বিচার পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মামলায় আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফয়েজুল হক মিলকী ও করিমুল হক।