বিরোধী দলের নেতাদের কিনতে নির্দেশনা দিচ্ছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

সমাবেশের আগে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, বিজয়নগর এলাকায় মিছিল করেনছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বিরোধী দল ও জোটের নেতাদের ‘কেনাবেচার জন্য রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সরকার নির্দেশনা দিচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলছেন, এভাবে ‘কেনাবেচা’ করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যাবে না।

অবরোধের সমর্থনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। সমাবেশের আগে প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, বিজয়নগর এলাকায় তাঁরা মিছিল করেন।

বর্তমান সরকারের অধীনে কিছু বিরোধী দল ও নেতার ভোটে যাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘যারা মনে করেছিল কে আসে কে না আসে...ফুল কিন্তু ফুটতে শুরু করেছে। আরও অনেক ফুল ফুটবে। মনোনয়ন ফরম সরকারিভাবে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া পর্যন্ত শত ফুল ফুটবে।’

আজকের সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা কথা বলার সময় ওবায়দুল কাদেরের গতকালের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টানেন। আওয়ামী লীগে যে ফুল ফুটছে তা প্লাস্টিকের ফুল মন্তব্য করে সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘এই ফুল, বাগানের ফুল না। এই ফুল প্লাস্টিকের। ঘরের মধ্যে সাজিয়ে রাখে প্লাস্টিকের ফুল। যার কোনো সুগন্ধ নাই। সেই ফুল দিয়ে তিনি (ওবায়দুল কাদের) এখন বাগান সাজানোর চেষ্টা করছেন। শুধু এই প্রজন্ম না, আগামী প্রজন্মও এই সরকারকে ভোট ডাকাত ও গণশত্রু হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করবে।’

নৌকা মার্কা ‘কেনাবেচা’ চলছে মন্তব্য করে সাইফুল হক বলেন, এর কারণ, এখন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। তাঁরা মনে করছেন, কোনো রকমে টিকিট কিনতে পারলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটা এলাকার জমিদারি নিশ্চিত করা যাবে।

বিএনপির কার্যালয় এখনো তালাবদ্ধ উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ এমন মাঠে খেলছে, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীদের আগেই তারা মাঠের বাইরে রেখে দিয়েছে। একটা ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে আগেই।

সরকার রাজনৈতিক নেতাদের কেনাবেচার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এভাবে কেনাবেচা করে নির্বাচন করলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে না।

দেশে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, বিশ্বের কোথাও স্বৈরতন্ত্র টিকে নেই।

বিরোধী দলের ওপর দেশে ব্যাপক নির্যাতন–নিপীড়ন চলেছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য তিনি বলেন, এই অবস্থায় দেশে নির্বাচন হওয়ার কোনো পরিবেশ নেই।

জেএসডির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশ।