পিরোজপুরের পিপিকে হাইকোর্টে তলব

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও স্বাভাবিক বিচারকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে পিরোজপুরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলা উদ্দিনের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার আদালত অবমাননার স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে পিপির বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পিপিকে আগামী ১৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

এক আসামির নিয়মিত জামিন শুনানির সময় পিপির বিরুদ্ধে এজলাসে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো ও স্বাভাবিক বিচারকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ গত ২৫ জুলাই লিখিত আকারে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে অবগত করেন পিরোজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমান। এরপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠাতে নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে।
আদেশের আগে আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের বক্তব্য শোনেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন আদালতে বলেন, উনি (বিচারক) কি পিপিকে এজলাস থেকে বেরিয়ে যেতে বলতে পারেন? ফৌজদারি মামলায় রাষ্ট্র তো পক্ষ। আদালত বলেন, বের করে দিলে তো প্রতিকার আছে। দুবার আদালতকে (পিরোজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) উঠতে (শুনানি মুলতবি করতে) হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখিত একটি প্যারা আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে পড়তে বলেন। এর ভাষ্য, এজলাসের বাইরে অবস্থান করার অনুরোধ উপেক্ষা করে পিপি হঠাৎ এজলাসে উচ্চ স্বরে বিভিন্ন মন্দ ভাষায় হুমকি-ধমকি প্রদান করে কর্তৃত্ব প্রদর্শনের মাধ্যমে বিচারকের বিচারকার্যে বাধা প্রদান করেন।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, পিপি দায়িত্বশীল ব্যক্তি, বলতে গেলে জেলার অ্যাটর্নি জেনারেল। আদালতের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন? উনি (পিপি) আদালতের সঙ্গে এমন আচরণ করলে জনগণের কাছে কী বার্তা যাবে। জনগণ ও বিচারপ্রার্থীর কাছে ভুল বার্তা যাবে। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন বলেন, পিপির আচরণ ঠিক হয়নি। তবে আদালত অবমাননার ক্ষেত্রে পুরো ঘটনা বিবেচনায় নিতে হবে। পরে আদালত আদেশ দেন।