ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির স্বপ্ন দেখাচ্ছেন গবেষকেরা

বলেশ্বর নদ হতে পারে দেশের ইলিশের আরেকটি বড় উৎস। এতে ইলিশের উৎপাদন বছরে সাড়ে সাত লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হতে পারে।

ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের আগে চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ছিল ইলিশে ভরপুর
ফাইল ছবি

ইলিশ যাঁরা খুব পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এ বছরটা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। একদিকে বাজারে ইলিশের সরবরাহ তুলনামূলক কম, অন্যদিকে দাম বেশি। তবে গবেষকেরা বলছেন, ইলিশের সুদিন শেষ হয়নি। মৎস্যবিজ্ঞানীদের দেওয়া ১০ দফা সুপারিশ মানলে বছরে ৭ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন সম্ভব।

আর সুন্দরবনসংলগ্ন বলেশ্বর নদ হতে পারে দেশের ইলিশের আরেকটি বড় উৎস। এতে ইলিশের মোট উৎপাদন বছরে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হতে পারে। এতে সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ খেতে পারবেন ক্রেতারা। বিদেশে রপ্তানি করেও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) এক গবেষণায় দেখা গেছে, বলেশ্বর নদ হতে পারে দেশের ইলিশের আরেক বড় উৎস। সেখান থেকে বছরে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত ইলিশ আহরণ করা সম্ভব। বলেশ্বর নদের মোহনায় বিষখালী, পায়রা, আন্ধারমানিক ও লতাচাপলী নদ-নদী এসে মিশেছে।

ওই পথ দিয়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বঙ্গোপসাগর থেকে নদের উজানে প্রবেশ করে। বলেশ্বর নদের সঙ্গে পূর্ব সুন্দরবনের নদী ও খাল (ভোলা নদী, বেতমোরী গাঙ, সুপতি খাল, দুধমুখী খাল ও ছোট কটকা খাল) সংযুক্ত। বলেশ্বর নদ হয়ে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ এসব খাল ও নদ–নদীতে প্রবেশ করে।

‘দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে হলে সঠিক সময়ে মা মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সব নদ-নদীতে ইলিশ এক সময় ডিম পাড়ে না। একেক নদীতে ইলিশ একেক সময় ডিম পাড়ে। ফলে যখন ইলিশ যে নদীতে ডিম পাড়বে, সেই নদীতে তখন তা ধরার নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। তাহলে ইলিশের উৎপাদন আরও কিছুটা বাড়ানো সম্ভব।
মো. আব্দুল ওহাব, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ইলিশ-বিশেষজ্ঞ

বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বলেশ্বরের মোহনা অঞ্চলকে ইলিশের প্রজননক্ষেত্র ঘোষণা করে তা রক্ষা করা প্রয়োজন। এ অঞ্চলে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে প্রতিবছর অক্টোবরে ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা দরকার (এ বছর এ লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা চলছে)। এতে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ লার্ভি ও জাটকা ইলিশ এবং অন্যান্য মাছের পোনা দেশের মৎস্যসম্পদে সঙ্গে যুক্ত হবে। এতে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে এবং মৎস্য জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। ওই অর্থবছর পর্যন্ত তার আগের ১০ বছরে ইলিশের উৎপাদন ৭৫ শতাংশ বেড়েছে।

আরও পড়ুন

তবে এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ইলিশ নদ-নদীতে কম এসেছে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সাগরেও এবার ইলিশ তুলনামূলক কম ধরা পড়েছে।

দরকার মজুত ও আহরণ সম্পর্কে ধারণা

দেশের ইলিশ গবেষক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইলিশ সম্পদের সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য এর মজুত সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা থাকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সেখান থেকে সর্বোচ্চ কী পরিমাণে ইলিশ আহরণ করা সম্ভব, তারও একটি ধারণা থাকা দরকার।

দীর্ঘ মেয়াদে ইলিশের সহনশীল উৎপাদন বজায় রাখতে বিএফআরআই থেকে জরিপ চালিয়ে সামগ্রিকভাবে ইলিশের প্রাথমিক মজুত ও ইলিশের প্রধান আবাসস্থলভিত্তিক (পদ্মা, মেঘনা ও সমুদ্রে) মজুত ও সর্বোচ্চ সহনশীল উৎপাদনও নিরূপণ করা হয়।

বিএফআরআইয়ের চাঁদপুরের নদীকেন্দ্রের গবেষক দল বঙ্গোপসাগরে ইলিশের মজুত নিরূপণের জন্য বরগুনার পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর মহিপুর ও খেপুপাড়া, খুলনা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিএফডিসি (বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন) ঘাটে জরিপ করে। মেঘনা নদীর মজুত জানার জন্য চাঁদপুর সদর, লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার ও রামগতি, ভোলার দৌলতখান ও মনপুরা, বরিশালের সদর ও পদ্মা নদীর মজুত জানার জন্য রাজশাহীর গোদাগাড়ী, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া, মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ধরা পড়া ইলিশ পর্যবেক্ষণ করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, পদ্মা নদীর ইলিশের দৈর্ঘ্য ৭ থেকে ৫৫ সেন্টিমিটার; মেঘনায় ৯ থেকে ৫৯ সেন্টিমিটার এবং সমুদ্রে ১৫ থেকে ৫৪ সেন্টিমিটারের মধ্যে। তবে সহনশীল মাত্রার চেয়ে বেশি ইলিশ আহরণ করতে দেখা গেছে, যা মোট উৎপাদন ধরে রেখে আরও বাড়ানোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন

বলেশ্বরের ইলিশ ভান্ডার

বিএফআরআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বলেশ্বর নদ ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবেশগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাগেরহাট, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বলেশ্বর নদ বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। ফলে এ অঞ্চলের জলজ পরিবেশ ও প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা বেশ সমৃদ্ধ। সার্বিক মৎস্য উৎপাদনেও এই নদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মৎস্য অধিদপ্তরের এফআরএসএস (ফিশারিজ রিসোর্সেস সার্ভে সিস্টেম) তথ্য অনুযায়ী, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলায় ইলিশ উৎপাদন সামান্য পরিমাণ বাড়লেও বরগুনার উৎপাদন কমে আসছে।

বলেশ্বর নদের ইলিশের প্রজনন অবস্থা নির্ণয়ে বিএফআরআইয়ের চাঁদপুরের নদীকেন্দ্র থেকে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছর গবেষণা করা হয়।

গবেষণাকালে পরিপক্ব ও প্রজননক্ষম মা মাছের উপস্থিতি, ডিমের আকার বা ব্যাস (জিএসআই মান), ডিম নির্গমনরত ইলিশের সংখ্যা, প্রজননোত্তর মাছের প্রাপ্যতার হার, নিষিক্ত ডিমের পরিমাণ, লার্ভি বা জাটকার সংখ্যা ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বলেশ্বর নদের চরখালী, তেলিখালী, তুষখালী, বড়মাছুয়া, রায়েন্দা, কচুবাড়িয়া, বগী বন্দর, মাঝের চর, উত্তর চরদুয়ানী, সুপতি, খলিফা বাজার পয়েন্টসহ বিস্তৃত অঞ্চল থেকে নমুনা নেওয়া হয় এবং এলাকায় জেলেদের জালে ধরা নৌকার মাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বলেশ্বর নদে পরিপক্ব ও প্রজননক্ষমÿমা ইলিশ মাছের উপস্থিতির হার ২০১৯ সালে ৬৫ শতাংশ, ২০২০ সালে ৬৯ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৫১ শতাংশ ছিল। ডিম নির্গমনরত ইলিশের প্রাপ্যতার হার ২০১৯ সালে ছিল ৪৯ শতাংশ, ২০২০ সালে ৫৫ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৪৩ শতাংশ। প্রজননোত্তর মাছের প্রাপ্যতার হার ২০১৯ সালে ৪৫ শতাংশ, ২০২০ সালে ৫০ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৪০ শতাংশ।

বলেশ্বর নদের পানিতে ইলিশের প্রয়োজনীয় খাবার প্রচুর পরিমাণে রয়েছে উল্লেখ করে গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইলিশ সাধারণত পানিতে থাকা ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও প্রাণিকণা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এদের জন্য আলাদা করে কোনো খাবার দিতে হয় না। বলেশ্বর নদের প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা অর্থাৎ উদ্ভিদকণা ও প্রাণিজ কণা ব্যাপক পরিমাণে পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে উদ্ভিদকণা। বলেশ্বর নদের চরখালী, তেলিখালী, তুষখালী, বড়মাছুয়া, রায়েন্দা, কচুবাড়িয়া, বগী বন্দর, মাঝের চর, উত্তর চরদুয়ানী, সুপতি ও খলিফা বাজার পয়েন্টে ইলিশ ধরার নৌকা থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে মাছের পাকস্থলীর খাদ্য উপাদান পরীক্ষা করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বলেশ্বরে ইলিশের ডিম ছাড়ার হার ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গড়ে ৫০ শতাংশের বেশি ছিল। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় প্রচুর ইলিশ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়, বলেশ্বর নদ ও মোহনা অঞ্চল ইলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননক্ষেত্র।

একই ধরনের পরিস্থিতি বা পরিবেশ থাকার তথ্যের ভিত্তিতে পদ্মা, মেঘনার ঊর্ধ্বাঞ্চল ও নিম্ন অববাহিকা, কালাবদর, আন্ধারমানিক, তেঁতুলিয়াসহ অন্যান্য উপকূলীয় নদ-নদীর মোহনায় মোট ছয়টি ইলিশের অভয়াশ্রম করা হয়েছে। ইলিশের প্রধান প্রজননক্ষেত্র হিসেবে প্রায় ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চিহ্নিত হয়েছে।

বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে ছয়টি নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। বলেশ্বর নদকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলে দেশের ইলিশের উৎপাদন ৭ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে।

নতুন অভয়াশ্রম ঘোষণা বিবেচনাধীন

মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের হিসাবে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। অথচ ছয় বছর আগে বিশ্বের মোট ইলিশের উৎপাদনের ৬৫ শতাংশ আসত বাংলাদেশ থেকে। এ সময়ের মধ্যে এখানে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে ইলিশের উৎপাদন। সে তুলনায় প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশের উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে ভারত।

ওয়ার্ল্ডফিশ, মৎস্য অধিদপ্তর ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবার শুধু পরিমাণের দিক থেকেই নয়, আকৃতিতেও বাংলাদেশের ইলিশের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ। ২০১৪ সালে এ দেশে ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজন ছিল ৫১০ গ্রাম। গত বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯১৫ গ্রামে।

২০২১ সালে তা আরও বেড়ে হয় ৯৫০ গ্রাম। অন্যদিকে ভারত, মিয়ানমার বা আরব সাগরের তীরবর্তী দেশগুলোয় যে সামান্য পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে, তার গড় ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের মধ্যে। পুষ্টিগুণ ও স্বাদের দিক থেকেও বাংলাদেশের ইলিশকেই সেরা বলে থাকেন বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা।

জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইলিশের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে এমনভাবে বাড়বে যে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বত্র মানুষ ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে। সরকার বলেশ্বরকে ইলিশের নতুন অভয়াশ্রম ঘোষণা করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। কারণ, একই সঙ্গে বলেশ্বর নদ-তীরবর্তী জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার কাজটিও সরকারকে করতে হবে।

‘এলাকা বুঝে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে’

দেশে ইলিশের উৎপাদন ৭ লাখ টনে উত্তীর্ণ করতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দেশের নদ-নদী ও সাগর থেকে আগামী দুই-তিন বছর পর্যন্ত প্রতিবারে ৭ লাখ টনের বেশি ইলিশ আহরণ করা যাবে না।

ইলিশের সর্বোচ্চ সহনশীল উৎপাদন বজায় রাখার জন্য মার্চ-এপ্রিলে জাটকার সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ইলিশকে জীবনচক্রে কমপক্ষেÿএকবার হলেও ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে হবে। প্রতিটি জাল ও জেলে নৌকা ডিজিটাল ট্যাগিংয়ের আওতায় আনতে হবে এবং সব জেলেকে ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ফাঁসের জাল সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া সহনশীল উৎপাদনমাত্রা বজায় রাখার স্বার্থে জেলে সম্প্রদায়ের আর্থসামাজিক অবস্থার সঙ্গে সংগতি রেখে তাদের জীবিকার সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। ইলিশের বিচরণ ও প্রজননক্ষেত্রগুলোর ওপর পরিবেশগত পরিবর্তন রোধে নদীদূষণ প্রতিরোধে কার্যকর পদ‌ক্ষেপ নিতে হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও ইলিশ-বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল ওহাব প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে হলে সঠিক সময়ে মা মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সব নদ-নদীতে ইলিশ এক সময় ডিম পাড়ে না। একেক নদীতে ইলিশ একেক সময় ডিম পাড়ে। ফলে যখন ইলিশ যে নদীতে ডিম পাড়বে, সেই নদীতে তখন তা ধরার নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। তাহলে ইলিশের উৎপাদন আরও কিছুটা বাড়ানো সম্ভব।