নিউইয়র্কে দুদিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার মঙ্গল শোভাযাত্রায় ছিল প্রবাসী বাঙালিদের ঢল। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য এমনকি কানাডা, হল্যান্ড, জার্মানি থেকেও প্রবাসীরা যোগ দেন প্রাণের এ উৎসবে। স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু করে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বাংলা সংস্কৃতির পরিবেশনা ও বৈশাখী মেলা। সব মিলে আয়োজনস্থল পরিণত হয় এক টুকরা বাংলাদেশে।
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস। তিনি বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘অজস্র মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে আমি অভিভূত। আমেরিকার অগ্রগতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সেক্টরে যে ভূমিকা রাখছেন, তা অতুলনীয়।’
উৎসবে শতকণ্ঠে বাংলা বর্ষবরণের আহ্বায়ক লায়লা হাসানের নেতৃত্বে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কমলিনী মুখোপাধ্যায়সহ পাঁচ শতাধিক শিল্পী উৎসবের নানা আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
লায়লা হাসান বলেন, অন্তত ১০ হাজার লোকের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের এ আয়োজন বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। কিন্তু বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে যেখানে বাংলাদেশিরা থাকবে, সেখানেই এ উৎসব হবে।
এনআরবি ওয়ার্ল্ডওয়াইড আয়োজিত বাংলা বর্ষবরণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বরণ এবং উদ্যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উৎসব স্মারক হিসেবে মেয়র এরিক অ্যাডামসকে উত্তরীয় ও উৎসব পাঞ্জাবি উপহার দেওয়া হয়। পাশাপাশি বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ স্মারকগ্রন্থ তুলে দেওয়া হয় মেয়রের হাতে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সৌন্দর্যের কথা তুলে ধরে সার্বিকভাবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য মেয়র অ্যাডামসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র কার্যালয়ের ডেপুটি কমিশনার দিলীপ চৌহান শতকণ্ঠে বর্ষবরণের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, বাংলার বারোয়ারি মেলার নানা অনুষঙ্গ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্টল, শিশুদের যেমন খুশি চিত্রাঙ্কন, পান্তাভাতের সঙ্গে ভাজা ইলিশ পরিবেশনসহ দিনভর নানা আয়োজন ছিল উৎসবে। পাশাপাশি বাংলা গান, কবিতা, নাটক, মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাজারো মানুষের অংশগ্রহণ পুরো প্রাঙ্গণটি হয়ে উঠেছে এক টুকরা বাংলাদেশ। আগামী বছর আরও বড় আকারে এ উৎসব উদ্যাপন করা হবে।
অনুষ্ঠানে শতকণ্ঠে বর্ষবরণের থিম সং কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। কবি ও সাংবাদিক দর্পণ কবীরের লেখা মৌলিক গানটি গেয়েছেন নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।