২৩ নাবিক সুস্থ আছেন, জাহাজে আছে ৬০ জলদস্যু: খুরশেদ আলম

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমছবি: প্রথম আলো

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ বাংলাদেশি নাবিক সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো.খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, জলদস্যুদের প্রায় ৬০ জন জাহাজে অবস্থান নিয়েছে।

জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে খুরশেদ আলম বলেন, ‘তাদেরসহ (নাবিক) জাহাজ ফেরত আনাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্য থেকে আমরা বিচ্যুত হব না।’ সকালে আন্তমন্ত্রণালয় মুক্তি বৈঠক হয়। শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় পূর্বে অপহৃত দেশি জাহাজ ‘জাহান মনি’ এবং মালয়েশিয়ার জাহাজ ‘আল-বেদো’তে কর্মরত সব বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধারের কথাও সংক্ষেপে জানান খুরশেদ আলম।

জলদস্যুরা মুক্তিপণ চেয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে মুক্তিপণের কথা প্রকাশিত হয়ে থাকলে তা কল্পিত। আমাদের কাছে এখনো কোনো মুক্তিপণ তারা চায়নি, মুক্তিপণের ব্যাপারে কোনো যোগাযোগও করেনি।’

খুরশেদ আলম জানান, ‘জাহাজ চলাচলের নানা ঝুঁকির রুট থাকে। আমাদের এই জাহাজটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রুট দিয়ে যায়নি। তারপরও জলদস্যুরা অপেক্ষায়ই ছিল বা এ নিয়ে ভিন্নমত আছে। জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) ভোর নাগাদ সোমালিয়ার কাছাকাছি নোঙর করেছে। জলদস্যুরা আমাদের সঙ্গে এখনো কোনো যোগাযোগ করেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা খবর রাখছি, জলদস্যুদের প্রায় ৬০ জন জাহাজে অবস্থান নিয়েছে এবং বাংলাদেশি ২৩ নাবিক সুস্থ আছেন।’

ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের আগের অভিজ্ঞতা আছে। জাহান মনি নামের একটি জাহাজ ২০১০ সালে এমন ঘটনার মুখে পড়েছিল। ১০০ দিনের মাথায় সব নাবিকসহ জাহাজটি আমরা ফেরত আনতে পেরেছিলাম।’

এ ছাড়া জলদস্যুদের কবলে পড়া মালয়েশিয়ান জাহাজ ‘আল-বেদো’ থেকে আলোচনার মাধ্যমে প্রায় তিন বছর চার মাস পর কেনিয়ার সেনাবাহিনী দিয়ে বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধার করার কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন।

এবারের ঘটনা প্রসঙ্গে সরকারের তৎপরতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টায় আছি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাহাজের মালিকসহ সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।’

ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না জলদস্যুদের কী দাবিদাওয়া। আমরা যদি জানতে পারি, তখন হয়তো কৌশলগতভাবেই গণমাধ্যমকে পুরোপুরি জানাতে পারব না। তবে যেভাবে ‘জাহান মনি’কে আনা হয়েছে, যেভাবে ‘আল-বেদো’ থেকে নাবিকদের অক্ষত আনা হয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ‘জাহান মনি’ আনতে এক শ দিন লেগেছে, আর মালয়েশিয়ান জাহাজ থেকে সাতজন ক্রু ফেরত আনতে লেগেছে তিন বছর চার মাস। কাজেই সময় একটা ব্যাপার।’