তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন

কলেজের মূল ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে’ পাঁচজন শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেনছবি: শিক্ষার্থীদের সৌজন্যে

সাত কলেজের একটি সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করাসহ ৭ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ওই কলেজের ৫ শিক্ষার্থী। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কলেজের মূল ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তাঁরা এ অনশন শুরু করেন।

এ বিষয়ে অনশনরত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সাত কলেজের জন্য একটি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলাম না, আমরা তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য আন্দোলন করেছি।’

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আমরা আমরণ অনশন পালন করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা অনশন পালন করব। সরকার এই দাবি মেনে না নিলে পরবর্তী সময়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।’

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা; অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীদের আবাসিক খরচ বহন; ২০২৪-২৫ সেশন শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত ন্যূনতম দুটি বিষয় আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন; একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ; শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আসনসংখ্যা সীমিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাদানের লক্ষ্যে গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।

অনশনরত অন্য চার শিক্ষার্থী হলেন রাশেদ (মার্কেটিং বিভাগ ২১-২২), বেল্লাল হাসান (বাংলা বিভাগ ২২-২৩), রানা আহমেদ (বাংলা বিভাগ ২০-২১) ও রায়হান (গণিত বিভাগ ২০-২১)।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় রাজধানীর সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রায় ৮ বছর আগে ২০১৭ সালে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়াই তাড়াহুড়া করে এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও পরীক্ষা, মানসম্মত শিক্ষাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান পুরোপুরি হয়নি। ফলে বারবার আন্দোলনে নেমেছেন এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গত সোমবার কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন না রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বৈঠক করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি।