সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত সীতাকুণ্ডে, ঢলে ভেঙে গেছে স্লুইসগেট
দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির পরিমাণ ১৯৩ মিলিমিটার। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অতি বর্ষণের কারণে সীতাকুণ্ডে পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে উপজেলার উত্তরাংশের ছয়টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা। এসব এলাকা হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতায় ১৫০ হেক্টর ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
পানির স্রোতে ভেঙে গেছে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদার খালের স্লুইসগেট। সরেজমিনে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সিকদার খাল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, খালটির ওপর থাকা স্লুইসগেটসহ বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বেড়িবাঁধের ভেতরের অংশের কৃষিজমিগুলো কোমরসমান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ওই এলাকায় বাড়িঘরও পানিতে ডুবে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম তারেক প্রথম আলোকে বলেন, সিকদার খালের স্লুইসগেটটি অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ছয় বছর আগেও এটি একবার ভেঙে যায়। একাধিকবার তাঁরা প্রাথমিক সংস্কার করে কোনোরকমে টিকিয়ে রেখেছিলেন। এবার তা–ও ভেঙে যায়। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও তিনটি স্লুইসগেট।
বেড়িবাঁধ এলাকায় কথা হয় কৃষক আকবর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাত্র চার দিন আগে ২৮ হাজার টাকা খরচ করে ৮০ শতক জমিতে আউশ ধান লাগিয়েছেন। লাগানোর দুই দিন পর থেকে তাঁর জমি পানির নিচে ডুবে যায়। পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার বারৈয়ারঢালা, সৈয়দপুর, মুরাদপুর ইউনিয়নের সব কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া পৌরসভা, বাড়বকুণ্ড ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আংশিক কৃষিজমি তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত যে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্লুইসগেট ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন। বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুত সংস্কারের জন্য তাগাদা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সার্বিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আরও দু–এক দিন পর বলা যাবে।