দুদকের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাততেন তাঁরা

দুদকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ফোন করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত সোমবার  যাত্রাবাড়ী, মুগদা ও বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি বলছে, বিভিন্ন ব্যক্তির নামে অভিযোগ গঠন, অভিযোগ থেকে অব্যাহতি, দায়মুক্তি–সংক্রান্ত তথ্য চুরি করে কিছু ঠিকাদার ও ভুয়া সাংবাদিক মিলে প্রতারণার ফাঁদ পাততেন তাঁরা। বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, নির্বাচিত প্রতিনিধি ও বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের ফোন দিয়ে দুদকের মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালক পরিচয় দিতেন। মামলা থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল টাকা নিতেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে করে ডিবি বলছে, প্রতারণায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. সেলিম ওরফে তানভীর ইসলাম (৩৯), মো. সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮), আবদুল হাই সোহাগ (৩৮) ও মো. আজমীর হোসেন (৩৭)। গত জুনে প্রতারণার আরেকটি মামলায় অপর তিনজন প্রতারকের সঙ্গে দুদকের একজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেন দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ–কমিশনার মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত শনিবার ঢাকার রমনা থানায় এই সংক্রান্ত একটি মামলা হয়। পরের দিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মশিউর রহমান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করে দেওয়ার কথা বলে তারা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন। চক্রের সদস্যরা দুদক কার্যালয়ের সামনে বা পাশের নাট্য মঞ্চ এলাকার আশপাশে ফাঁদে ফেলা লোকজনকে আসতে বলে নগদ টাকা নিতেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছেন বলে জানিয়েছে ডিবি। তদন্ত–সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার সেলিম একসময় রডমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে তিনি নির্মাণকাজের ঠিকাদার হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে তিনি প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েন।

চক্রের আরেক সদস্য সোহাগ একসময় ডিজে পার্টিতে কাজ করতেন। এ কাজ করার সময় তাঁর সঙ্গে দালালদের সখ্য গড়ে ওঠে। সোহাগ দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ব্যক্তিদের তথ্য চুরি করে সেলিমের কাছে সরবরাহ করতেন। পরে সেলিম দুদকের কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালক পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে ফাঁদে ফেলতেন।