এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরে দাঁড়ানোর প্রশ্ন এখানে আসবে কেন? গতকাল পর্যন্ত এ মামলায় আমি শুনানি করেছি, আজ আদেশের জন্য ছিল। আদেশের সময় আদালতে সিনিয়রকে থাকতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। মামলায় সাধারণত জুনিয়র (ফাইলিং লইয়ার) যাঁরা থাকেন, তাঁরা আদালতের আদেশ গ্রহণ করে থাকেন।
মামলার বিষয়বস্তু দেখে শুনানি করেছি মাত্র। তারেক রহমানের এপিএস বলে এখন শোনা যাচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে এই আসামির পক্ষে সিনিয়র কাউন্সেল হিসেবে আমার শুনানিতে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রসহ কোথাও লেখা নেই যে নুর উদ্দিন আহমেদ অপু তারেক রহমানের এপিএস ছিলেন। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনেও অপু তারেকের এপিএস ছিলেন, এটি উল্লেখ নেই। প্রয়াত আবদুল মতিন খসরু এর আগে সিনিয়র হিসেবে অপুর পক্ষে শুনানি করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষও কখনো শুনানিতে বলেননি যে অপু তারেকের এপিএস ছিলেন। এ ক্ষেত্রে মামলার বিষয়বস্তু দেখে শুনানি করেছি মাত্র। তারেক রহমানের এপিএস বলে এখন শোনা যাচ্ছে, তাই ভবিষ্যতে এই আসামির পক্ষে সিনিয়র কাউন্সেল হিসেবে আমার শুনানিতে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৮ সালের মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গত বছর এবং মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় চলতি বছরের শুরুতে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত আজ আদেশের জন্য দিন রাখেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজীবুর রহমান। নুর উদ্দিন আহমেদ অপুর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
এ নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে গতকাল জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, ‘যেকোনো আইনজীবী যে কারো মামলা লড়তে পারেন—এতে কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। তবে আদর্শ বলে একটি ব্যাপার থাকে। আদর্শগত বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত। পেশা হিসেবে আইনজীবীদের নির্দিষ্ট সীমানা নেই। তবে যারা সংসদ সদস্য ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করেছেন, তাঁদের কাছে দেশ-জাতির অনেক প্রত্যাশা থাকে। কাজেই যাঁরা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, তাঁরা যদি আদর্শগত দিকটা বজায় রাখেন, তাহলে আমাদের নীতিনৈতিকতার মান আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে।’