গণমাধ্যমকর্মী বিল: আরও ৯০ দিন সময় নিল সংসদীয় কমিটি
‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) বিল-২০২২’ পরীক্ষা করে জাতীয় সংসদে প্রতিবেদন জমা দিতে পঞ্চম দফায় আরও ৯০ দিন সময় নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
নির্দিষ্ট সময়ে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে না পারায় আজ সোমবার জাতীয় সংসদে আরও ৯০ দিন সময় চান সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ তাতে অনুমোদন দেয়।
গত বছরের ২৮ মার্চ আলোচিত এই বিল সংসদে তুলেছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিবেদন দিতে না পেরে বারবার বাড়তি সময় নেয় সংসদীয় কমিটি। চলতি সংসদে এই বিল নিয়ে প্রতিবেদন জমা না দিলে তা তামাদি হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে আবার নতুন করে এ–সংক্রান্ত বিল আনতে হবে সংসদে।
প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে সাংবাদিক, সম্পাদক ও সংবাদপত্রের মালিকপক্ষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। গত মার্চে আইনের খসড়া সংসদে তোলার পর থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন প্রস্তাবিত আইনের বেশ কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে। প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমকর্মী ও মালিকপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গণমাধ্যম আদালত স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে।
প্রস্তাবিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন, ২০২২’ পাস হলে এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে বলে মনে করছে সম্পাদক পরিষদ। গত এপ্রিলে এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ বলেছিল, প্রস্তাবিত এই আইনের ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি ধারাই সাংবাদিকবান্ধব নয়। সার্বিকভাবে এই আইন গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এ রকম আইন চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটি বলেছে, এই আইন পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে।