রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়ার জেরা শেষ হয়েছে। এ ছাড়া একই অভিযোগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় আসামি খোরশেদ আলমের পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা এস এম রাশেদুল ইসলামের আংশিক জেরা হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ-৫–এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে আজ বৃহস্পতিবার এ জেরা হয়।
এ ছাড়া খুরশীদ আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সালাউদ্দিনকে জেরা করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আগামী ১০ নভেম্বর একই আদালতে জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার বাদীর জেরা অনুষ্ঠিত হবে।
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, শেখ হাসিনার মামলায় খুরশীদ আলমের পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তার জেরার জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিপক্ষ তাঁর জেরা সম্পন্ন করেছে। এ মামলায় খুরশীদ আলমের পক্ষে মামলার বাদীকে জেরার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আর সজীব ওয়াজেদ জয়ের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার আংশিক জেরা হয়েছে। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে করা মামলার কোনো সাক্ষ্য ও জেরা হয়নি।
গত ২৯ অক্টোবর শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ ও সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে প্লট দুর্নীতির মামলায় প্রথম আসামি হিসেবে রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম আদালতের আত্মসমর্পণ করেন। এরপর খুরশীদ আলমের আইনজীবী তাঁর পক্ষে জেরা করার সুযোগ পান।
এর আগে প্লট দুর্নীতি মামলায় গত ৩১ জুলাই শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার পরিবারের বিরুদ্ধে পৃথক ছয় মামলায় দুই পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত। শেখ হাসিনা ও তাঁর ছেলে–মেয়ে ছাড়া তাঁর পরিবারের অন্য অভিযুক্ত সদস্যরা হলেন বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।
মামলায় শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে অভিযুক্ত ১৬ জন হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। তাঁরা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার ৬টি প্লট তাঁদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।