গুগলের এআই প্রশিক্ষণ পেলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ শিক্ষার্থী

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘ইনফরমেশন ক্রেডিবিলিটি অ্যান্ড এআই লিটারেসি’ প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৭২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন
ছবি: প্রথম আলো

‘আগে এআই টুলস কিছুটা জানতাম কিন্তু আজকের প্রশিক্ষণে আরও গভীরভাবে বুঝতে পেরেছি। বিশেষ করে পিনপয়েন্ট আমার গবেষণার কাজে অনেক সহায়তা করবে।’

গুগলের উদ্যোগে এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) অনুষ্ঠিত ‘ইনফরমেশন ক্রেডিবিলিটি অ্যান্ড এআই লিটারেসি ট্রেনিং’-এ অংশগ্রহণ শেষে এমনটাই বলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ক চৌধুরী।

গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এ প্রশিক্ষণে এনএসইউর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৭২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীরা তথ্য যাচাই, বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরির পাশাপাশি গুগলের আধুনিক এআই টুলস—নোটবুক এলএম, জেমিনি, পিনপয়েন্ট, গুগল ট্রেন্ডসসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রিজওয়ানুল ইসলাম বক্তব্য দেন
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন রিজওয়ানুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারপারসন রিজওয়ান খায়ের, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী এস এম রিজওয়ান উল আলম এবং প্রথম আলোর কর্মকর্তারা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল সাংবাদিকতা মানে প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকতা। তবে এআইয়ের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও এটি সাংবাদিকদের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। বলা যায়, আগে যেখানে শত ঘণ্টা লাগত, এখন তা কয়েক মিনিটেই সম্ভব। আজকের এই প্রশিক্ষণে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা রইল।

রিজওয়ান খায়ের বলেন, ভুল তথ্যের এ যুগে এমন উদ্যোগ সত্যিই সময়োপযোগী। গুগল ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ এ আয়োজনের জন্য। এটি সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের জন্য সহায়ক হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী ও সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম রিজওয়ান উল আলম
ছবি: প্রথম আলো

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলা এই সেশনে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক আবদুল কাবিল খান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সহকারী অধ্যাপক মালিহা তাবাসসুম, দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আজাদ বেগ এবং প্রথম আলো ডিজিটাল বিজনেস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার আ ফ ম খায়রুল বাশার।

প্রাথমিকভাবে অংশগ্রহণকারীরা এআই টুলের কার্যকারিতার সঙ্গে অপরিচিত ছিলেন। তবে প্রশিক্ষণের পর তাঁদের আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। প্রাথমিক সমীক্ষার তুলনায় প্রশিক্ষণ শেষে সব টুলের সর্বাধিক ব্যবহার শতকরা হারে অনেক বেড়ে গেছে। যেখানে পিনপয়েন্টে আগে ছিল ৫২ শতাংশ ও পরে ৮৭ শতাংশ, গুগল ম্যাপ, রিভার্স ইমেজ ও গুগল লেন্সে আগে ৮২ শতাংশ ও পরে ৯২ শতাংশ, গুগল ট্রেন্ডসে আগে ৬৩ শতাংশ ও পরে ৮৮ শতাংশ, নোটবুক এলএমে আগে ৫১ শতাংশ ও পরে ৮৭ শতাংশ এবং জেমিনিতে আগে ৮৩ শতাংশ ও পরে ৯১ শতাংশ।

প্রশিক্ষণার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আর প্রশিক্ষকদের তথ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সেশন
ছবি: প্রথম আলো

সমাপনী বক্তব্যে রিজওয়ান-উল-আলম বলেন, ‘এ অভাবনীয় উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্ত হচ্ছি। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।’

গুগল ও প্রথম আলোর এই উদ্যোগের আওতায় দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী সেশনগুলো অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে।