চীনের নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরীয় ফোরামে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে বিভ্রান্তি

চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি বৈঠকের আয়োজন করে
ছবি: সংগৃহীত

চীনের উদ্যোগে গত সপ্তাহে কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত চীন–ভারত মহাসাগরীয় উন্নয়ন সহযোগিতা ফোরামের ১৯ দেশের বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৈঠকের পর প্রচারিত যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির উপস্থিতির কথা বলা হলেও সরকারের কোনো কর্মকর্তা এতে যোগ দেননি। তবে হাইব্রিড ফরম্যাটে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক কে এম আজম চৌধুরী অংশ নিয়েছেন।

গত ২১ নভেম্বর ওই বৈঠক শেষে কুনমিং যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘অভিন্ন উন্নয়ন: সুনীল অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে তত্ত্ব ও চর্চা’ শিরোনামে ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে হাইব্রিড ফরম্যাটে (অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ অনুষ্ঠানস্থলে এবং বাকিরা অনলাইনে যুক্ত হয়ে) আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান, ইরান, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, সেশেলস, মাদাগাস্কার, মরিশাস, জিবুতি, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৯টি দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। পাশাপাশি তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও এতে যোগ দেন। বৈঠকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীন ও দেশগুলোর মধ্যে সামুদ্রিক দুর্যোগ প্রতিরোধ এবং প্রশমন সহযোগিতা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে বেইজিং।

সিডকার চেয়ারম্যান লুও ঝাওহুই
ছবি: সংগৃহীত

তবে এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ও মালদ্বীপ জানিয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে সরকারি কোনো প্রতিনিধি কুনমিংয়ের ওই বৈঠকে অংশ নেননি।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা, বেইজিং ও কুনমিংয়ে বাংলাদেশ মিশনের কোনো কর্মকর্তা চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো–অপারেশন এজেন্সির (সিডকা) বৈঠকে অংশ নেননি। অন্য দেশ থেকে সরকারি পর্যায়ে কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল কি না, তা বাংলাদেশ জানে না বলে ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান এতে অংশ নেন।

জানতে চাইলে মঙ্গলবার রাতে মুঠোফোনে কে এম আজম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চীনের কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ পাওয়ার পর অনলাইনে অংশ নিয়েছিলাম। সিডকার আয়োজনটি ছিল মূলত বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের। এতে সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও গবেষণা সহযোগিতার মাধ্যমে সামর্থ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই আলোচনায় একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে এ অঞ্চলে দুর্যোগ প্রবণতার বিষয়টি তুলে ধরেন কে এম আজম চৌধুরী। এ অবস্থায় ধনী দেশগুলো আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিলে গবেষণাগুলো কাজে আসবে। সুনীল অর্থনীতির বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরির প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না জানিয়ে কে এম আজম চৌধুরী বলেন, ‘আমি দেশের প্রতিনিধিত্ব করিনি। এখানে সুনীল অর্থনীতি নিয়ে কথা হচ্ছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ হিসাবে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারেন।’
প্রসঙ্গত গত ২১ নভেম্বর ইউনান প্রদেশের সরকারের সহযোগিতায় সিডকা বৈঠকটির আয়োজন করে। সিডকার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন ভারতে চীনের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং দেশটির সাবেক উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুও ঝাওহুই।

আরও পড়ুন