শিশু হাসপাতালে পরীক্ষা ছাড়া চিকিৎসক নিয়োগের অভিযোগে দুদকের অভিযান
নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই চিকিৎসক নিয়োগের অভিযোগে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দুদক জানিয়েছে, অভিযানে শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন ২০২১, বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নিয়োগবিধি ২০১১, বোর্ড সভার সিদ্ধান্তসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়। এতে দেখা যায়, বোর্ডের ২২তম সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে ১ জুন ২০২৫ তারিখে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি, যার মাধ্যমে ৬ মাসের জন্য অ্যাডহক ভিত্তিতে আবাসিক মেডিকেল অফিসার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চার সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে আবেদন যাচাই করে ৬৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে অধিকাংশই অবৈতনিক চিকিৎসক, এমডি শিক্ষার্থী এবং প্রশিক্ষণার্থী আছেন। প্রতিষ্ঠানটির জন্য এখনো নির্ধারিত কোনো প্রবিধান প্রণয়ন হয়নি।
এদিকে গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে দালালদের সঙ্গে যোগসাজশে ঘুষের বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। অভিযানকালে টিম গাজীপুর বিআরটিএ কার্যালয়ে ছদ্মবেশে সেবাগ্রহীতা সেজে অবস্থান নিলে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ধরা পড়ে।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা কিছু প্রার্থীকে অনৈতিকভাবে পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বরের চেয়ে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীকেও পাস করানোর প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এমনকি একাধিক খাতায় একই ব্যক্তির হাতের লেখা এবং শূন্য নম্বর পাওয়ার পরও উত্তীর্ণ দেখানোর দৃষ্টান্ত পাওয়া গেছে। বেশ কিছু খাতায় নাম, রোল নম্বর ও ঠিকানা না থাকলেও পাস দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি যেসব প্রার্থীকে ফেল করানো হয়েছে, তাঁদের খাতা বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এ ছাড়া মাদারীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে এতিম শিক্ষার্থীদের ক্যাপিটেশন গ্রান্টের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। অভিযানে অভিযোগে বর্ণিত হজরত শাহ মাদার (রহ.) দরগাহ শরিফ এতিমখানা সরেজমিন পরিদর্শন, গত ছয় বছরের বরাদ্দ ও রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, সমাজসেবা দপ্তর থেকে বর্ণিত এতিমখানায় ২০১৯ সাল থেকে প্রতি মাসে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা হারে মোট ১৪৫ এতিম শিক্ষার্থীর জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত মোট বরাদ্দকৃত ২ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মনে হয়েছে।
অভিযানে আরও জানা যায়, বর্ণিত এতিমখানাটিতে কখনোই ৩০০ এতিম শিক্ষার্থী ছিল না। বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে অতিরিক্ত বরাদ্দ উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়া এতিমখানার এফডিআর, অন্যান্য অনুদান ও এতিম শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত অর্থ ব্যক্তিগত ব্যবসায় ব্যবহারের প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে।