সাংবাদিক শাহ আলমের মৃত্যুতে আরএসএফের উদ্বেগ, গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান

শাহ আলম খন্দকারছবি: রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারসের সৌজন্যে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দৈনিক মাতৃজগতের স্থানীয় প্রতিনিধি খন্দকার শাহ আলমের ওপর হামলা ও মৃত্যুর ঘটনায় সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশে গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

গতকাল শুক্রবার সংগঠনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এমন আহ্বান জানানো হয়।

আরএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়, খন্দকার শাহ আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নৃশংস হামলার শিকার হয়েছেন। সাবেক এক কারাবন্দী তাঁর ওপর এ হামলা চালিয়েছেন। খন্দকার শাহ আলমের একটি সংবাদ প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ওই ব্যক্তিকে জেল খাটতে হয়েছিল। তার প্রতিশোধ হিসেবেই এ হামলা চালানো হয়।

গত ২৫ জুন জেল থেকে ছাড়া পান ওই ব্যক্তি। মুক্তির দিনেই তিনি রাস্তায় প্রকাশ্যে খন্দকার শাহ আলমকে মারধর করেন এবং তাঁর মোবাইল ফোনসহ ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন। পরে একই দিনে ৪৮ বছর বয়সী এই সাংবাদিক নিজের জিনিসপত্র ফিরে পেতে হামলাকারীর সঙ্গে দেখা করেন। তাদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে খন্দকার শাহ আলমকে লাথি ও ঘুষি মারা হয়। পরে তিনি অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকেন। পরে নবীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন

খন্দকার শাহ আলম স্থানীয় সংবাদের পাশাপাশি দুর্নীতিবিষয়ক প্রতিবেদন করতেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, খন্দকার শাহ আলমের স্বজনদের প্রতি আরএসএফ সমবেদনা জানাচ্ছে। যে হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এটা নিশ্চিত যে সাংবাদিক হওয়ার কারণেই তাঁর ওপর এ হামলা হয়েছে। খন্দকার শাহ আলমের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে ও বাংলাদেশের সব সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অপরাধের বিচার হতেই হবে। এ ধরনের হামলা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকারকে এখনই স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস।

২০২৫ সালে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম। বিশেষ করে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের স্কোর খুবই কম। একে উদ্বেগজনক বলে মনে করছে আরএসএফ।