স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
ফাইল ছবি

দেশে দীর্ঘদিন ধরে অধস্তন আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি ও জিপি) নিয়োগ দেওয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। সাধারণত যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের সমর্থক আইনজীবীরাই এসব পদে বসেন। এখন এই ব্যবস্থায় সংস্কার করে ‘স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস’ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই ব্যবস্থায় ৩০ শতাংশ নিয়োগ হবে স্থায়ীভাবে। বাকি ৭০ শতাংশ নিয়োগ এখনকার মতোই রাজনৈতিক বিবেচনায় হবে। একই সঙ্গে পিপি ও জিপিদের বেতন বাড়াচ্ছে সরকার।

তিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের শেষ দিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আইন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব তথ্য জানান।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, পিপি, জিপি ও তাঁদের সহকারীদের বেতন ছিল দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সেটাকে বাড়িয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী, ৬৪টি জেলাকে ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। তাঁর প্রস্তাব হলো, বড় শ্রেণির জেলার পিপিদের বেতন হবে ৫০ হাজার টাকা। মাঝারি শ্রেণির জেলার পিপিদের বেতন হবে ৪৫ হাজার টাকা। ছোট শ্রেণির জেলার পিপিদের বেতন হবে ৪০ হাজার টাকা। আদালতের ওপর নির্ভর করে পিপি, জিপি ও তাঁদের সহকারীদের নির্ণয় করা হবে। এই কাজে ২৬৭ কোটি টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হলে তারা বরাদ্দ দিতে রাজি হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তিনি মনে করেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে যারাই সরকারে আসবে, তারা বিষয়টি বিবেচনা করবে। পিপি-জিপিদের সম্মানজনক অবস্থানে নেওয়ার জন্য তাদের বেতন কাঠামো বদলানো প্রয়োজন।

আনিসুল হক আরও বলেন, পিপি-জিপিদের বেতন বাড়ানোর আরেকটি কারণ হলো, তাঁরা একটি স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছেন। এই ব্যবস্থায় ৩০ শতাংশ নিয়োগ হবে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা স্থায়ী হবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁদের মনোনীত করা হবে। যেমন দুর্নীতি দমন কমিশনবিষয়ক। বাকি ৭০ শতাংশ নিয়োগ হবে এখনকার মতো, মানে রাজনৈতিক বিবেচনায়।

স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিসও কি আগামী জাতীয় নির্বাচনের পর হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তাঁরা চেষ্টা করবেন এখনই করার জন্য। এ নিয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, প্রয়োজন হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে।