সময়ের মুখ
ইফতার আয়োজনে অনেক মানুষই সহায়তা করেন
পবিত্র রমজান মাসে দেশের অনেক জায়গায় স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। কুড়িগ্রামে কয়েক শ মানুষের জন্য এ ধরনের আয়োজন করে থাকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মেঠোজন। সংগঠনটি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর অন্যতম সংগঠক মানিক চৌধুরী জানালেন সংগঠন ও ইফতার আয়োজন সম্পর্কে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জাহানুর রহমান।
প্রশ্ন :
ইফতার আয়োজনের শুরু হলো কীভাবে, কবে?
মানিক চৌধুরী: শুরুটা ২০১৫ সালের দিকে। তখন আমরা নদীভাঙনকবলিত মানুষকে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিতাম। পরে শহরের ছিন্নমূল মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা ও ইফতার দেওয়ার চিন্তাটি আসে।
প্রশ্ন :
সংগঠনটি কী শুধু এই উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল?
মানিক চৌধুরী: ২০১৩ সালে মেঠোজন গঠিত হয়। শুরুতে কুড়িগ্রামের অসহায় শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানো, আঞ্চলিক লোকগান ও লোকগীত সংরক্ষণ এবং গবেষণার জন্য সংগঠনটি গঠন করা হয়। ২০১৫ সাল থেকে মানবিক কাজ শুরু করি আমরা।
প্রশ্ন :
মানবিক কাজে কী চিন্তা থেকে ঝুঁকলেন?
মানিক চৌধুরী: বন্যা, খরা ও শীতে কুড়িগ্রামের দরিদ্র মানুষকে কষ্ট পেতে হয়। আমাদের মনে হলো, শুধু সাংস্কৃতিক কাজ নিয়ে থাকলে হবে না, মানবিক কাজেও এগিয়ে আসতে হবে। তখন থেকে আমরা রান্না করা খাবার নিয়ে নদীভাঙন ও বন্যাকবলিত মানুষকে সহায়তা শুরু করলাম। নাম দিলাম ‘এক বেলার আহার’।
প্রশ্ন :
এই যে পথচারী ও ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে প্রতিদিন ইফতার করেন, কেমন লাগে?
মানিক চৌধুরী: আমরা স্লোগান গিয়েছি ‘দেশটা সমতার, একসাথে ইফতার’। মেঠোজনের সদস্যরা পথচারীদের সঙ্গে নিয়মিত ইফতার করি। আমার ভালো লাগে। এখন দিনে প্রায় ৪০০ মানুষ আমাদের ইফতারে যোগ দেয়।
প্রশ্ন :
টাকা কোথায় পান?
মানিক চৌধুরী: মেঠোজনের সদস্য, বন্ধুবান্ধব ও স্বজনদের অনুদানে চলে। আমরা শুরুর দিকে ২০০ জনের মতো মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতাম। তখন মেঠোজনের সদস্যদের চাঁদাই ছিল ভরসা। এখন দেশে ও দেশের বাইরের অনেকে সহায়তা করে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেকে ব্যক্তিগতভাবে সহায়তা করেছেন।
প্রশ্ন :
ইফতারে কী কী থাকে?
মানিক চৌধুরী: বিরিয়ানি, খিচুড়ি, সাদা ভাত ইত্যাদি।
প্রশ্ন :
আপনার পেশা কী, পরিবারে কে আছে?
মানিক চৌধুরী: আমি কুড়িগ্রাম জেলার একজন সাধারণ মানুষ এবং সংস্কৃতিসেবী। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে চারজনের পরিবার। ছেলে আসিফ রিয়াজ চৌধুরী ও মেয়ে শামা মাহজাবিন চৌধুরী অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী। দেশে স্ত্রী আর আমি আছি। মেঠোজন ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দিন চলে যায়।