হামলার শিকার হওয়ার পর আর চট্টগ্রামে ফেরেননি প্রকল্প পরিচালক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৮তম সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। চট্টগ্রাম, ২৪ মে
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আড়াই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কাউন্সিলররা। বর্তমান প্রকল্প পরিচালক মো. গোলাম ইয়াজদানী দীর্ঘদিন ধরে অফিসে না আসায় প্রকল্পের কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে বলে দাবি তাঁদের। এ অবস্থায় তাঁর পরিবর্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অথবা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে একজন প্রকৌশলীকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান কাউন্সিলররা।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২৮তম সাধারণ সভায় কাউন্সিলররা এ দাবি জানান। সভায় প্রকল্প পরিচালকের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না পেয়ে গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে একদল ঠিকাদার নগরের টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে ঢুকে মো. গোলাম ইয়াজদানীকে মারধর করেন। এ সময় তাঁর টেবিলের কাচ ও নামফলক ভেঙে ফেলা হয়। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি আর সিটি করপোরেশনে আসেননি। তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁকে গত বছরের ১৪ আগস্ট ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন

মো. গোলাম ইয়াজদানীর অনুপস্থিতিতে নতুন প্রকল্প পরিচালকের বিষয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন সিটি করপোরেশনের লালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের পরিচালক অফিস না করার কারণে উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। এই স্থবিরতা কাটাতে একজন স্থায়ী প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লায় পুরোনো নগর ভবনের কে বি আবদুল ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরের সড়কটি পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই খুলে দেওয়ার দাবি জানান কাউন্সিলররা। পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম বড় পশুর হাট বিবিরহাটে। কাঁচা চামড়ার বড় আড়ত আতুরার ডিপো এলাকায়। এই দুটি এলাকা হাটহাজারী সড়কের (মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়ক) পাশে অবস্থিত। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় মুরাদপুর মোড়ে সেতুর নির্মাণকাজ চলার কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কয়েক মাস ধরে। এখন যদি তা খুলে দেওয়া না হয়, তাহলে পশুর হাটে কেনাবেচা ও চামড়ার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সড়ক চালুর বিষয়ে সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং ওয়াসার একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় সাধারণ সভায়।

এদিকে সাধারণ সভায় এবারের বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কাউন্সিলররা। কাউন্সিলরদের বক্তব্যের জবাবে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সিডিএ প্রতিনিধির উদ্দেশে বলেন, যেসব খালে এখনো মাটি রয়ে গেছে, তা দ্রুত উত্তোলন করতে হবে। জন–অসন্তোষের বিষয়টি মাথায় রেখে সিডিএকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরও পড়ুন