দেশের ৯০.৬% বিদ্যালয়ে অন্তত একটি টয়লেট আছে: বিবিএসের জরিপের তথ্য
দেশের ৯০ দশমিক ৬ শতাংশ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অন্তত ১টি টয়লেট রয়েছে। যদিও মান ও ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে ভিন্নতা আছে। ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ বিদ্যালয়ে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১টি উন্নত টয়লেট রয়েছে। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহারের সুবিধা থাকা টয়লেটের সংখ্যাও অপ্রতুল (৪ দশমিক ৬ শতাংশ)।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘ওয়াশ ইন এডুকেশন অ্যান্ড হেলথ কেয়ার ফ্যাসিলিটিজ সার্ভে-২০২৪’–এর প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। জরিপের ফলের তথ্য তুলে ধরেন বিবিএসের এসডিজি সেলের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা (উপপরিচালক) মো. আলমগীর হোসেন। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবিএস জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ২৬ জুন থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপে ৬৪টি জেলার সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জরিপের তথ্য বলছে, ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশ বিদ্যালয়ে ও ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নত পানির উৎসে প্রবেশগম্যতার সুবিধা রয়েছে। তবে মৌলিক পানি সেবার সংজ্ঞা অনুযায়ী, যেখানে উন্নত পানির উৎস প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণের ভেতরে থাকতে হয়, সেই মানদণ্ড পূরণ করে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ৮৬ শতাংশের মতো বিদ্যালয় ও ৭০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এই মানদণ্ড পূরণ করে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ৫৫ শতাংশের কিছু বেশি বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী উন্নত পানির উৎসে প্রবেশগম্যতার সুবিধা রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এই হার আরও কম, প্রায় ৪১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে হাত ধোয়ার সুবিধা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে পানি ও সাবানের অভাব রয়েছে। প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান হাত ধোয়ার মৌলিক সেবার মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে। এর ফলে কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন ব্যাহত হচ্ছে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, নারীদের মাসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা সুবিধাও অপর্যাপ্ত। ২০ দশমিক ৭ শতাংশ বিদ্যালয়ে কিশোরীদের জন্য পৃথক, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট রয়েছে। আর প্রায় ৭ শতাংশ বিদ্যালয় মাসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা সেবা দিয়ে থাকে। এসব সুবিধার ঘাটতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, অস্বস্তি ও শিক্ষায় লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যকে বাড়িয়ে তোলে।
জরিপের তথ্য বলছে, ১১ শতাংশের মতো বিদ্যালয় ও প্রায় ৩৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ রয়েছে।
বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী, ওআইসি ইউনিসেফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি ফারুক আদরিয়ান ডুমন, বিবিএসের ডেমোগ্রাফি অ্যান্ড হেলথ শাখার পরিচালক মো. এমদাদুল হক।