আলোচনা ও কাজ দুটোই কম

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে মানুষের ধারণা কম। জনপরিসরে আলোচনা–বিতর্ক দরকার।

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ নিয়ে কাজ হচ্ছে এক যুগের বেশি সময়। দেশে এ বিষয়ে অর্জনের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশের মানুষের নিজস্ব ব্যয় বাড়ছে, মানুষ বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয়ের মুখে পড়ছে, চিকিৎসা করাতে গিয়ে মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য আছে। গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার কমেছে, শিশুপুষ্টির উন্নতি হয়েছে। শিশুদের টিকা দেওয়ার হার অনেক বেশি। জন্মনিয়ন্ত্রণসামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মোট প্রজননহার কমেছে। বেশ কিছু রোগের আধুনিক চিকিৎসা দেশে আছে। তারপরও অনেক মানুষ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার বাইরে থেকে যাচ্ছে অথবা তারা প্রয়োজনের সময় সেবা পাচ্ছে না। আবার সেবা পেলেও মানসম্পন্ন সেবার বিষয়ে অভিযোগ আছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১০ সালে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে প্রথম বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। ওই প্রতিবেদনে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার মূল বিষয় এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের উপায়গুলো ব্যাখ্যা করা হয়। বাংলাদেশও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কাজ শুরু করেছে এক যুগের বেশি।

তিনটি কারণে দেশ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে নীতিনির্ধারণী মহলে পরিষ্কার ধারণার ঘাটতি আছে। এটি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল হাতে নেওয়া হয়নি। কিছু কৌশলের কথা কাগজে–কলমে বলা হলেও তার বাস্তবায়ন নেই।’

এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস পালিত হচ্ছে। রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে যৌথভাবে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘কাঙ্ক্ষিত পৃথিবী গড়ি: সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি।’

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কী
সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার অর্থ হচ্ছে প্রত্যেক মানুষ স্বাস্থ্যের উন্নতিসহায়ক, রোগ প্রতিরোধমূলক, আরোগ্যলাভকারী ও পুনর্বাসনমূলক সেবা পাবে। মানুষ এসব সেবা পাবে তার প্রয়োজনের মুহূর্তেই। এসব সেবা হতে হবে মানসম্পন্ন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১০ সালের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ন্যায্যতার কথা বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, মানুষ অসুস্থতার সময় তার সাধ্য বা সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে। মানুষ অর্থের অভাবে চিকিৎসাবঞ্চিত থাকবে না বা চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়বে না। মানুষ কী রোগে আক্রান্ত বা রোগের ধরন কী—সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে তা বিচার্য হবে না।

সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ধারণায় তিনটি পরস্পর সম্পর্কিত বিষয় ছিল: যার সেবা দরকার সেই সেবা পাবে, অর্থ ব্যয় না করলে সেবা পাবে না বিষয়টি এমন নয়; নামমাত্র সেবা হলেই চলবে না। সেবা হবে মানসম্পন্ন, যেন সেবা গ্রহণকারীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়; এটা নিশ্চিত করা যে সেবা নেওয়ার কারণে মানুষ আর্থিক ঝুঁকিতে পড়বে না।

দেশে যক্ষ্মা রোগের ক্ষেত্রে সর্বজনীন সুরক্ষা চালু আছে। দেশের যেকোনো নাগরিক যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করাতে পারেন বিনা মূল্যে। ধনী–দরিদ্র বা শহর–গ্রামের নাগরিকের জন্য এই সেবা দিচ্ছে সরকার। হৃদ্‌রোগ বা ক্যানসারের ক্ষেত্রেও সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থা আছে। কিন্তু মানসম্পন্ন হৃদ্‌রোগ চিকিৎসার ব্যবস্থা অপ্রতুল। ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে একই পরিস্থিতি। মানসম্পন্ন সেবা হয়তো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আছে, কিন্তু সব মানুষের সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য নেই।

সামর্থ্য বা আর্থিক নিরাপত্তা না থাকলে মানুষ সেবা খুঁজতে চায় না, সেবার মান বিচার করে না, এমনকি মানুষ সেবা নেয়ই না। কিন্তু মানুষ যদি জানে চিকিৎসার ব্যয় পরিশোধ করা লাগবে না, অথবা ব্যয় আগাম পরিশোধ করা আছে অথবা চিকিৎসার জন্য বিশেষ তহবিল আছে তাহলে সে চিকিৎসা নেবে, সেবাবঞ্চিত থাকবে না। সেবার ক্ষেত্রে অর্থায়নের কৌশল নির্ধারণ করা সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেউ স্বাস্থ্যবিমাব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করছেন, কেউ সামাজিক বিমার ধারণার কথা বলছেন। কেউ এই দুইয়ের মিশ্রণের কথা বলছেন।

বাংলাদেশ কোন পথে
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়ন বিষয়ে কৌশলপত্র তৈরি করে। ‘এক্সপ্যান্ডিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর হেলথ টুওয়ার্ডস ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ’ নামের ওই কৌশলপত্রে কিছু উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল: স্বাস্থ্য খাতের জন্য অর্থ বা সম্পদ বাড়ানো, বেশি মানুষের জন্য সেবা নিশ্চিত করা ও ন্যায্যতা বাড়ানো এবং সম্পদ বরাদ্দ ও ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানো।

২০১২ সালে স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬০ শতাংশ। ওই কৌশলপত্রে বলা হয়েছিল, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় কমে আসবে এবং ২০৩০ সালে তা কমে ৩২ শতাংশ হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) নামে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছিল।

পরিস্থিতি কী
সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন অগ্রগতি নিয়ে ২০২২ সালে হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতে দেখা যাচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি হয়েছে। যেমন চিকিৎসা নিতে গিয়ে মানুষের নিজস্ব ব্যয় কমেনি, বরং বেড়েছে। ২০১২ সালে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬০ শতাংশ, এখন তা ৭২ দশমিক ৭ শতাংশ।

চিকিৎসা নিতে গিয়ে মানুষ আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কোনো পরিবারের মোট আয়ের ১০ শতাংশ যদি স্বাস্থ্য খাতে চলে যায়, তাহলে তাকে বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয় বলে। দেশের ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ এই বিপর্যয়মূলক ব্যয়ের মধ্যে পড়েছে।

এই বিপর্যয়ের কারণে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ অর্থাৎ ৬২ লাখ ১১ হাজার মানুষ প্রতিবছর চিকিৎসা নিতে গিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে।

২০২১ সালের নভেম্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গবেষণা তথ্য উপস্থাপনের সময় সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষকেরা বলেছিলেন, ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ ওষুধ। ব্যক্তির ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ যায় ওষুধের পেছনে। চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে দেশের ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ খানা বা পরিবার হাসপাতাল, ক্লিনিক বা কোনো চিকিৎসকের কাছে যায় না। প্রয়োজন থাকলেও তারা সেবা নেওয়া থেকে বিরত থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদনে বর্তমান কত মানুষ নির্বাচিত কিছু সেবার আওতায় আছে, সেই তথ্যও দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ৭৩ শতাংশ দম্পতি পরিবার–পরিকল্পনা সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট, চারটি প্রসবপূর্ব সেবা পায় ৩৭ শতাংশ গর্ভবতী মা, ৯৮ শতাংশ শিশু ডিপিটি টিকা পায়। সংক্রামক ব্যাধির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ৮১ শতাংশ যক্ষ্মারোগী চিকিৎসা পায়, ২৩ শতাংশ এইচআইভি রোগী অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল চিকিৎসা পায়। অর্থাৎ শিশুদের টিকা দেওয়া ছাড়া অন্য বিষয়গুলোতে সর্বজনীন সেবা নিশ্চিত হয়নি।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির মূল্যায়ন
দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি (এসএসকে) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মূল দায়িত্বে ছিল স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট। ২০১৬ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী, ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলায় এসএসকে বাস্তবায়ন শুরু হয়। তিনটি উপজেলা হাসপাতালের অবকাঠামো ও রোগনির্ণয় পরীক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি ওষুধের নিশ্চয়তা, জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, চিকিৎসা নীতিনির্দেশনা (প্রটোকল) তৈরি করা হয়। হাসপাতাল পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। অংশীজনদের সম্পৃক্ত করা ও সচেতনতা বাড়ানোর কাজ হাতে নেওয়া হয়। তিনটি উপজেলায় আর্থিক সহায়তাদান ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

তিনটি উপজেলার দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবার শনাক্ত করা, তাদের এসএসকে সম্পর্কে সচেতন করা, প্রিমিয়াম সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া ছিল কাজের অংশ। এরপর দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারের তালিকা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় কমানো এবং চিকিৎসা নিতে গিয়ে কেউ যেন নিঃস্ব হয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে হিসাব–নিকাশ ও অর্থ পরিশোধের দায়িত্ব পায় একটি বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রতিষ্ঠান ইউএসএআইডির আর্থিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষকেরা ২০২১ সালে এ কর্মসূচির মূল্যায়ন করেছেন। গবেষকেরা দেখেছেন, তিনটি উপজেলার গ্রামগুলোতে দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা সব পরিবার এসএসকে কার্ড পায়নি। আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে না থেকেও অনেকে কার্ড পেয়েছে। কালিহাতী ও মধুপুর উপজেলা হাসপাতালে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা দুর্বল ছিল। তিনটি হাসপাতালেই কনসালট্যান্ট কম ছিল এবং রোগনির্ণয় ব্যবস্থাতেও ঘাটতি ছিল।

বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় কিছু সেবার অস্তিত্ব পাননি গবেষকেরা। জনবল না থাকায় কালিহাতী উপজেলা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে প্রসবসেবা ও পুষ্টিসেবা গবেষকদের চোখে পড়েনি। এ রকম আরও নানা দুর্বলতার তথ্য আছে ১৮২ পৃষ্ঠার মূল্যায়ন প্রতিবেদনে।

দীর্ঘ প্রস্তুতির পর তিনটি উপজেলায় এসএসকে বাস্তবায়ন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বেশ কিছু দুর্বলতা থাকার পরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি আরও কিছু উপজেলায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

করণীয়

২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনা মহামারি দেশের অর্থনীতিতে বড় আঘাত হানে। ইউক্রেন–রাশিয়া চলমান যুদ্ধের কারণে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে আগের চেয়ে ওষুধের দাম বেড়েছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।

নাগরিক সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও উন্নয়ন সমন্বয় যৌথ নীতি পর্যালোচনায় বলেছে, জাতীয় বাজেটের ৭–৮ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে স্বাস্থ্য খাতে। অন্যদিকে সরকার হাসপাতালে বিনা মূল্যে দেওয়া ওষুধের পরিমাণ বাড়ালে ব্যক্তির ব্যয় কমবে।

অনেকে মনে করেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে জনপরিসরে আলোচনা কম। স্বাস্থ্যবিমার পক্ষে–বিপক্ষেও বিতর্ক হওয়া দরকার। রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছাড়া দেশব্যাপী সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কেউ কেউ মনে করেন, বর্তমান স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও পদ্ধতিতে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জন সম্ভব নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার চাপ দিতে হবে। পঞ্চম স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাত কর্মসূচি প্রণয়নের কাজ চলছে। তাতে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ও বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কর্মকৌশলের কথা থাকতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও সুচিন্তিত কর্মকৌশল ছাড়া সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্ভব নয়।