কম দরে দরপত্রের কারণে নিম্নমানের কাগজে ছাপা হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক: সংসদীয় কমিটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর জন্য দাপ্তরিক যে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়, সাধারণত তার চেয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কম দরে দরপত্র দাখিল করেন দরপত্রদাতারা। ফলে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের প্রবণতা দেখা যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিকে এ তথ্য জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২৩ মে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পাঠ্যপুস্তকের কাগজ ও মুদ্রণের মান নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে এ জন্য দায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ওই সুপারিশের বিষয়ে অগ্রগতি জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদনে নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যপুস্তক ছাপার ওই কারণ উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সমস্যা সমাধানে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণ কার্যক্রমকে ‘পণ্য’ হিসেবে বিবেচনা না করে ‘কার্য’ হিসেবে বিবেচনা করার বিষয়ে মতামত চেয়ে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটকে (সিপিটিইউ) চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয়।
সংসদীয় কমিটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, মাধ্যমিক স্তরে নিম্নমানের পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করায় পরিদর্শকের প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকের কাগজের মান পুনরায় যাচাই করা হচ্ছে।
আরেকটি সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমে বাংলাদেশ অ্যান্ড গ্লোবাল স্টাডিজ বই আবশ্যিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে ঢাকার ব্রিটিশ কাউন্সিলে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে পাঠ্যপুস্তক ছাপার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুণগত মান বজায় রাখার সুপারিশ করা হয়। কমিটি মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম মনিটরিং জোরদার করতে সুপারিশ করে। এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসাগুলোকে মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে তাগিদ দেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, মোতাহার হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন, আবদুল মজিদ, আহমদ হোসেন, বিপ্লব হাসান, আবদুল মালেক সরকার ও আজিজুল ইসলাম বৈঠকে অংশ নেন।