লন্ডনে প্রসিকিউশনের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর
ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে হয়েছে
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, আইনানুগ প্রক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর (আন্তর্জাতিক মুখপাত্র) সাইফুদ্দিন খালেদ।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্তোরাঁয় বাংলা গণমাধ্যমের জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইফুদ্দিন খালেদ এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুলিবর্ষণ, গুম ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করে পৃথক মামলার মাধ্যমে বিচার করা হচ্ছে। এই বিচার কোনো প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নয়, বরং মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া।
প্রসিকিউশনের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি বেঞ্চে মোট ১২টি মামলা বিচারাধীন ও নিষ্পত্তির পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে ১০৫ জনের বেশি অভিযুক্ত রয়েছেন। এর মধ্যে একাধিক মামলায় শেখ হাসিনার নাম এসেছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রধান মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের আগস্টে অভিযোগ গ্রহণের মাধ্যমে শুরু হয়। এরপর দীর্ঘ তদন্ত, সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে রায় ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হয়। ওই রায়ে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলায় প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার নথি, ৯৩টি ডকুমেন্টারি, ৩২টি বস্তুগত আলামত এবং ৮৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি উপস্থাপন করা হয় বলে জানানো হয়। অভিযুক্তের বক্তব্য গ্রহণে আইনগত সব সুযোগ অনুসরণ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন প্রসিকিউশনের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল একক কোনো রায়ের মধ্যে থেমে নেই। ২০২৪ সালের সহিংসতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ঘটনার জন্য পৃথক মামলা ও বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে কোনো সরকার বা গোষ্ঠী যেন মানবতাবিরোধী অপরাধ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কি কোনো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, বিদেশি সরকার কিংবা বৈশ্বিক নাগরিক সমাজের সংগঠনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, ‘আমি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং (যুক্তরাজ্যের) অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বর্তমানে তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’