বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আহত শিক্ষক মাসুকা বেগমের (৩৭) মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে পাশের বেডের আরেক শিক্ষককে বলে যাওয়া শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোহাগপুরে নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক মাসুকা বেগম। তিনি ওই স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
আজ মঙ্গবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মরদেহ হস্তান্তরের সময় মাসুকা বেগমের খালাতো ভাই মনির হোসেন বলেন, মৃত্যুর আগে হাসপাতালে পাশের বেডে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষককে মাসুকা তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা বলেন। তিনি বলেন, মৃত্যু হলে যেন তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোহাগপুরে কবর দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী মরদেহ এখন গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মর্গ থেকে মরদেহ নিয়ে বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে বের হওয়ার ফটকে অ্যাম্বুলেন্স কিছু সময়ের জন্য থামানো হলো। মরদেহ হস্তান্তরের কিছু আনুষ্ঠানিকতা তখনো বাকি। সেগুলো সারছিলেন মাসুকা বেগমের আরেক ভাই। আর অ্যাম্বুলেন্সে চালকের আসনের পাশে বসে অঝোরে কাঁদছিলেন বড় বোন পাপড়ি রহমান।
বাইরে অপেক্ষারত মাসুকা বেগমের খালাতো ভাই মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, লাশ ব্রাহ্মবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। মারা যাওয়ার আগে পাশের বেডে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষকের কাছে তিনি এমনটাই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। মারা গেলে যেন তাঁকে সোহাগপুরে কবর দেওয়া হয়। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁকে সেখানেই নেওয়া হচ্ছে। এর আগে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে মরদেহের গোসল করানো হবে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় মরদেহ হস্তান্তর শুরু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত থেকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজনদের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আজ সকাল ১০টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের মর্গে কর্মরত একজন পুলিশ সদস্য বলেন, গতকাল রাত থেকে বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে আজ সকালে হস্তান্তর করা হয়েছে ছয়জনের মরদেহ। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা লাশ নিয়ে গেছেন।