গণমাধ্যমকে অশুভ প্রভাবমুক্ত রাখতে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: মান্না
গণমাধ্যমকে সরকারি বা যেকোনো অশুভ প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হলে কারও কাছে করুণা চেয়ে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, এর জন্য আলাদা করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সংস্কার: সুপারিশ, বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথাগুলো বলেন। আজ বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা চাইছি, সংবাদমাধ্যমকে সরকারি বা যেকোনো অশুভ প্রভাবমুক্ত একটা মুক্ত সংবাদপত্র বা মিডিয়ার জগৎ হিসেবে তৈরি করা হোক। আমি মনে করি, এটা কারও কাছে কোনো করুণা চেয়ে হবে না, কারও কাছে সাপোর্ট চেয়ে হবে না। এটা একটা মুভমেন্ট, মানে সংবাদপত্র বা মিডিয়ার স্বাধীনতার আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে কী রকম করে গড়ে তোলা যায়, কীভাবে জয়ী করা যায়, সেই কথা ভাবতে হবে।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আলটিমেটলি পলিটিকস ইজ দ্য কমান্ডার অব দ্য সোসাইটি (শেষ পর্যন্ত সমাজের সর্বময় নিয়ন্ত্রক হলো রাজনীতি)। বাকি যা–ই আছে, সাংবাদিকতা বলেন, কালচার বলেন, স্পোর্টস বলেন, সবকিছুই হলো কমান্ডেড। পলিটিকস যে রকম করে কমান্ড করবে, তারা সে রকম করেই নিজেদের তৈরি করবে, করতে বাধ্য হবে।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের ওয়েট করতে হবে নেক্সট গভর্নমেন্টের জন্য।’
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘আমি বলছি, আপনাদের কমিট করতে হবে।...মিডিয়া বলুক যে এই পার্টি ভালো কথা বলেছে, একে ভোট দিতে পার; এই পার্টি ঠিক বলে নাই, একে ভোট দিও না।’
আর গণমাধ্যমের মালিক ও কর্মীদের উদ্দেশ্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যে প্রপোজাল আপনারা দিয়েছেন, সেগুলো চালু রাখেন, চর্চা চালু রাখেন। পারলে আপনারা একটা টিম করে সব পার্টির কাছে যান। গিয়ে বলেন, এটা আমাদের প্রস্তাব, আপনাদের বক্তব্য কী, এই গভর্নমেন্ট তো কিছু করেনি এই পর্যন্ত, নেক্সট আপনাদের কমিটমেন্টটা কী?’
এদিকে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের সমালোচনা করে এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমি খুব ব্রিফলি একটা কথা বলি। মানে, যা–ই করেছেন, বর্তমান সরকার সংস্কার নিয়ে, এ হচ্ছে ফুল অব সাউন্ড অ্যান্ড ফিউরি, অলমোস্ট নাথিং (হইচই অনেক, ফলাফল শূন্য)। কী হয়েছে, শেষ পর্যন্ত জানা যাচ্ছে না। আজও বলতে পারছি না, এনসিপি সই করবে, কি করবে না। সব মিলে কী দাঁড়াবে?’
গণমাধ্যম বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তিনি চান, গণমাধ্যম যেন দেশের রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক বাস্তবতা যথাযথভাবে তুলে ধরে। এর মধ্যে একধরনের ডিরেকশনও (নির্দেশনা) থাকে। অনেকে হয়তো এ রকম বলবেন, পলিটিক্যাল পার্টির বায়াস দিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিত না। কিন্তু তাঁর মনে হয়, যে জামায়াতে ইসলাম একটা পত্রিকা বের করতে পারে, বিএনপি একটা পত্রিকা বের করতে পারে।