সিরিশ কাগজের আমদানি মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
সিরিশ কাগজের আমদানি মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি ও টাকা পাচারের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য পর্যালোচনা করে আমদানি করা সিরিশ কাগজের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এর আগে ‘মিথ্যা ঘোষণায় সিরিশ কাগজ আমদানি’ শিরোনামে গত বছরের ৩০ এপ্রিল প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের অভিযোগ’ শিরোনামে গত বছরের ৩ মে অপর একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে গত ২২ মে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়।
জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন যুক্ত করে রিটে বলা হয়, বিশ্ববাজারে গত ১০ বছরে সিরিশ কাগজের দাম ৫ গুণ বেড়েছে। অথচ বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আমদানি মূল্য মিথ্যা ঘোষণায় সিরিশ কাগজ শুল্কায়ন করছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির, তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী নাঈম সরদার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, দেশের প্রায় ৩০০ কোটি টাকার সিরিশ কাগজের পুরো বাজারই আমদানি–নির্ভর। সিরিশ কাগজ আমদানিতে ন্যূনতম ঘোষিত কোনো মূল্য নেই। এই সুযোগই নিচ্ছেন একশ্রেণির বাণিজ্যিক আমদানিকারক। এর মাধ্যমে আমদানিকারকেরা ফাঁকি দিচ্ছেন বিপুল পরিমাণ শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)—এসব দিক তুলে ধরে রিটটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ ওই নির্দেশ দেন।
বাণিজ্যসচিব, অর্থসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী হুমায়ন কবির।