নিরুপায় হয়েই জ্বালানির দাম সমন্বয় করেছে সরকার: নসরুল হামিদ

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ
ফাইল ছবি

জ্বালানি তেলের দাম গতকাল শুক্রবার রাত থেকে বাড়ানো হয়েছে। এতে যাত্রীদের ওপর চাপ বিপুলভাবে বাড়বে বলে মনে করছেন পরিবহনখাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জ্বালানি মন্ত্রণালয় গত রাতে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি।

বিবৃতিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যত দিন সম্ভব ছিল, তত দিন সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই দাম কিছুটা সমন্বয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম পুনর্বিবেচনা করা হবে।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল বিকেলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। তবে সেই বৃদ্ধির মাত্রা হবে ‘যৌক্তিক’ এবং ‘সহনীয়’। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তেলের দাম বাড়াল সরকার, মূল্যবৃদ্ধির হারের দিক থেকে যা রেকর্ড। ডিজেল ও কেরোসিনের ক্ষেত্রে লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। পেট্রলে ৪৪ টাকা এবং অকটেনে বেড়েছে ৪৬ টাকা। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন থেকে ডিজেলের দাম হবে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা, যা এত দিন ৮০ টাকা ছিল। কেরোসিনের দামও একই হারে বাড়ানো হয়েছে। নতুন দাম ডিজেলের সমান, অর্থাৎ ১১৪ টাকা।

বাড়ানো হয়েছে পেট্রল ও অকটেনের দামও। পেট্রলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১৩০ টাকা, যা এত দিন ৮৬ টাকা ছিল। অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ দফায় দাম বাড়ানোর পর জ্বালানি তেল খাতে সরকারের ভর্তুকি একবারে কমে আসবে। সরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। আইএমএফের ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম হলো জ্বালানি খাতে ভর্তুকি প্রত্যাহার। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সেই শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে দেশে দাম কম থাকায় তেল পাচারের আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের কলকাতায় ডিজেলের দাম প্রতি লিটার বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১৪ টাকা। পেট্রলের দাম ১৩০ টাকা। দেশে দাম কম থাকায় পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো সময়ের দাবি।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিপিসি গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই) জ্বালানি তেল বিক্রি করে ৮ হাজার ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতির দিকে। আগামী দিনগুলোয় তা আরও কমবে।

আরও পড়ুন