পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং। ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারিছবি: পিআইডি

কানাডায় পাচার হওয়া অর্থ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সে দেশের সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জনগণের টাকা চুরি করে বেগমপাড়ায় সম্পদ কেনা হয়েছে। জনগণের এ সম্পদ পুনরুদ্ধারে তিনি সহায়তা চান।

আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা সম্পদ পুনরুদ্ধারে সহযোগিতা কামনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার শাসনামলের অলিগার্ক ব্যবসায়ী, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশ থেকে শত শত বিলিয়ন মার্কিন ডলার চুরি করেছেন, যার একটি অংশ কানাডায় পাচার হয়েছে, বিশেষ করে টরন্টোর কুখ্যাত ‘বেগমপাড়া’ এলাকায় সম্পদ কেনার মাধ্যমে। তিনি কানাডায় পাচার হওয়া সম্পদ শনাক্ত, জব্দ ও পুনরুদ্ধারে সহায়তা চান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তারা আমাদের জনগণের টাকা চুরি করে বেগমপাড়ায় সম্পদ কিনেছে। আমরা এই সম্পদ পুনরুদ্ধারে আপনাদের সহায়তা চাই। এটি আমাদের জনগণের সম্পদ।’

অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাকে স্বাগত জানান কানাডার হাইকমিশনার। প্রধান উপদেষ্টার সম্পদ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগে কানাডা সরকার সহায়তা করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। হাইকমিশনার জানান, কানাডার সরকার চিহ্নিত ব্যক্তিদের পাচার করা অর্থ জব্দ এবং তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ‘প্রক্রিয়া’ চালু রেখেছে।

কানাডার হাইকমিশনার আরও জানান, বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত রয়েছে।

রাষ্ট্রসংস্কার কর্মসূচির প্রতি ইঙ্গিত করে অজিত সিং বলেন, ‘আপনারা যে মহৎ কাজ করছেন, আমরা তা সমর্থন করি। ইতিমধ্যে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা জানতে আগ্রহী, আরও কীভাবে আপনাদের সাহায্য করতে পারি।’ তিনি বলেন, কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। তিনি আরও জানান, পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে কানাডার একজন মন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসবেন।

অধ্যাপক ইউনূস নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ঢাকা আরও বেশি কানাডীয় বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আমরা আপনাদের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে চাই এবং আমরা চাই, কানাডীয় কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করুক।’ তিনি বলেন, বর্তমানে বহু বাংলাদেশি কানাডায় বসবাস ও পড়াশোনা করছেন। তাই ঢাকায় কানাডার একটি ভিসা অফিস স্থাপন করা প্রয়োজন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।