বৃষ্টিভেজা দিনের শেষে সন্ধ্যা নেমেছিল বৃহস্পতিবার ইমন রাগের আলাপে বিস্তারে। নতুন প্রজন্মের উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিক্ষার্থীরা গানে বাদনে সন্ধ্যা–রাতকে সুরময় করে তুলেছিল ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে।
উচ্চাঙ্গ সংগীতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়’ দশম বর্ষে পদার্পণ করল এবার। সে উপলক্ষেই শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দুই দিনের সংগীতায়োজন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ‘সুনাদ’ নামের এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল ঘোষিত সময়মতোই—ঠিক সাড়ে ছয়টায়। সংক্ষিপ্ত আকারে সূচনা বক্তব্য দেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।
লুভা নাহিদ চৌধুরী জানান, ২০১২ সালে তাঁরা যখন অনেক বড় আকারে উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবের সফল আয়োজন করেছিলেন, তখনই দেশের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চাঙ্গ সংগীত শিক্ষা ও চর্চার জন্য একটি মানসম্মত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রয়োজন বোধ করেছিলেন। সেই সূত্রেই এক পর্যায়ে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের প্রতিষ্ঠা। অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দশম বর্ষে পদার্পণ করল। এখানে উপমহাদেশের স্বনামখ্যাত ওস্তাদ ও পণ্ডিতেরা বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের তালিম দিচ্ছেন। উচ্চাঙ্গ সংগীত একটি গুরুমুখী বিদ্যা। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে সংগীতে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়গুলো আয়ত্ত করছে। দুই দিনের এই অনুষ্ঠানে একেবারে প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।
এরপর আর কোনো কথা নয়, শুধু গান আর বাজনা। শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে ইমন রাগের খেয়াল দিয়ে। এতে অংশ নেয় শাশ্বত কুমার মণ্ডল, মিথিলা ফাল্গুনী মণ্ডল, কুমার বিক্রমাদিত্য সরকার, মাহির আজমাইন, সদ্য মজুমদার, ত্বকী ইয়াসার ইমান ও দিব্য শ্রী সাহা। তাদের তবলায় সংগত করে ফাহিমদা নাজনীন এবং হারমনিয়ামে ছিলেন ধ্রুব সরকার।
পরে কাফি রাগে সেতার বাদন করে সোহিনী মজুমদার, তবলায় ছিলেন নুসরাত ই জাহান। বাদনের পরে অনিয়া পাল গেয়েছে যোগ রাগে খেয়াল। তবলায় ছিল আপন বিশ্বাস। এরপরে ছিল এসরাজ ও সারেঙ্গির দ্বৈত বাদন। পরিবেশন করেছে সৌমিত রায় ও নিলয় হালদার। জয়জয়ন্তী রাগে ধ্রুপদ পরিবেশন করেছে টিংকু শীল, তাকে পাখোয়াজে কুমার প্রতিবিম্ব ও তানপুরায় অপূর্ব কর্মকার সহযোগিতা করেছে। সালাহউদ্দিন মোহাম্মদের সঞ্চালনায় আসরের শেষ পরিবেশনা ছিল সজীব সরকারের তিন তালে একক তবলা বাদান।
শনিবারেও থাকবে একক ও দলীয় পরিবেশনায় বাদন ও কণ্ঠ সংগীত। শুরু হবে আগের মতোই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। সংগীতানুরাগীদের জন্য দ্বার অবারিত।