দুই বছর পর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে বইমেলা, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে করে বইমেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ উপলক্ষে সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষ। সেখানে এসব তথ্য জানানো হয়।

করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে বইমেলা শুরু হয়নি। তবে এবার প্রথম দিন থেকেই বইমেলা শুরু হচ্ছে। মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবার বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মিলে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় মেলা হবে। এবার বইমেলার প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

সংবাদ সম্মেলনে বইমেলার আয়োজক কর্তৃপক্ষ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা জানান, ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে দর্শক, ক্রেতা ও পাঠকেরা রাত সাড়ে আটটার পরে মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে মেলা শুরু হবে।

এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকছে না। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তর করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার লিটল ম্যাগাজিনের জন্য ১৫৩টি স্টল ও ৫টি উন্মুক্ত স্থান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতবারের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের স্থানটি এবারের মেলাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই জায়গাটি এবার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট স্থান, শৌচাগার ও খাবারের দোকান দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

প্রতিবারের মতো এবারের মেলায় মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশের পক্ষ থেকে বই কেনায় ছাড় থাকবে। এ কথা জানান বইমেলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের সিএমও মীর নওবত আলী। করোনা–পরবর্তী সময়ে অনেক ধরনের সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বইমেলার ব্যবস্থাপনা করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ক্রসওয়াক কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ মারুফ।

বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন ও শিশু-কিশোর উপযোগী প্রকাশনা বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে ‘শিশুপ্রহর’। প্রতিবারের মতো এবারের বইমেলাতেও চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার,  রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ও কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। এসব পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা হবে মেলার শেষ দিন (২৮ ফেব্রুয়ারি)।

বইমেলার জন্য গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের কাছ থেকে ১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার কথা জানান অমর একুশে বইমেলার পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। অনিয়মের অভিযোগ ওঠা এসব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এবারের মেলায় নতুন–পুরোনো ১৩৬টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। প্রথম দিন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী: পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলী’, ‘আমার দেখা নয়া চীন: পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘কারাগারের রোজনামচা: পাঠ বিশ্লেষণ’ এবং প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’ বইয়ের ইংরেজি অনুবাদগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী ‘আমার জীবন, আমার রাজনীতি’ বইটির মোড়ক উন্মোচন হবে। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত সংকলন গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচনেরও কথা রয়েছে।