কালুরঘাট সেতু সংস্কারে গতি বাড়বে পাঁচ গুণ

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে সেতুর সংস্কার শেষ হবে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আশা করছে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু সংস্কারের কাজ চলছে। গতকাল বেলা ১১টায়
ছবি: জুয়েল শীল

আর মাত্র এক মাস পরেই কক্সবাজারে যাবে ট্রেন। ১২ নভেম্বর দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এর আগে জোরশোরে চলছে কালুরঘাট সেতু সংস্কারের কাজ। সেতুটির সংস্কার ছাড়া এই রেলপথে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল সম্ভব ছিল না।

৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলত। তবে জীর্ণ হয়ে পড়ায় ট্রেনের গতিবেগ ছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। সংস্কার করা হলে ট্রেনের গতি পাঁচ থেকে ছয় গুণ বাড়বে। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হবে বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আশা করছে।

রেলওয়ের প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সংস্কারকাজের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। গত ১ আগস্ট সেতুটির বড় ধরনের সংস্কারকাজ শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই সংস্কারকাজ করছে। পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল বিশেষজ্ঞ। সেতুর সংস্কারকাজ শুরুর পর ট্রেন ও গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প হিসেবে ফেরি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সংস্কারের জন্য প্রায় শত বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতু থেকে পিচঢালা (কার্পেটিং) তুলে ফেলা হয়েছে। এখন মূল কাঠামো মজবুত করার কাজ চলছে। এতে ইস্পাতের কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন করে লাগানো হচ্ছে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত ১৯৩১ সালে নির্মিত হয় কালুরঘাট রেলসেতু। ১৯৬২ সালে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুবার সংস্কার করা হয়েছিল। সংস্কারকাজ শুরুর আগে ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ এই সেতুতে ট্রেনের গতি ছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। এই গতিতে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল সম্ভব নয়।

আবার ট্রেনের ভারী ইঞ্জিন বহন করাও সম্ভব নয় জরাজীর্ণ সেতুর পক্ষে। এ জন্য সেতুর গতি বাড়াতে এবং মজবুত করতে বড় ধরনের সংস্কারের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। সংস্কারের পর গতি ৫০-৬০ কিলোমিটার হবে। সংস্কারকাজের জন্য গত জুনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের সঙ্গে ৪৩ কোটি টাকার চুক্তি করা হয়।

গত বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সংস্কারের জন্য প্রায় শত বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতু থেকে পিচঢালা (কার্পেটিং) তুলে ফেলা হয়েছে। এখন মূল কাঠামো মজবুত করার কাজ চলছে। এতে ইস্পাতের কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন করে লাগানো হচ্ছে।

সংস্কারকাজে যুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, সংস্কারকাজে প্রায় দুই শ কর্মী কাজ করছেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা প্রথম আলোক বলেন, কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজের গতি সন্তোষজনক। দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন চালুর আগেই এই সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হবে। এখন রেললাইন বসানোর কাজ চলছে। ২০ অক্টোবরের আগেই রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হবে। এরপর সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।