দু-এক দিনে জেঁকে বসতে পারে শীত

দেশের উত্তরাঞ্চলে শীত পড়েছে। শিশুসন্তানকে গরম জামাকাপড় পরিয়ে বাইরে বেরিয়েছেন এই মা। কামারপাড়া এলাকা, সদর উপজেলা, রংপুর, ৭ ডিসেম্বর
ছবি: মঈনুল ইসলাম

আকাশ ছেয়ে আছে ধূসর মেঘে। রোদ নেই। ঝিরঝিরে বৃষ্টিও হচ্ছে। যেন বর্ষাকাল। ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমের’ প্রভাবে গতকাল বৃহস্পতিবারের চিত্র ছিল অনেকটা এমনই। তবে ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল সন্ধ্যায় শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। আজ শুক্রবার ভোর থেকে বৃষ্টি না-ও থাকতে পারে। যদিও বৃষ্টি কমার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। দু-এক দিনের মধ্যে জেঁকে বসতে পারে শীত।

এমন বৃষ্টিভেজা মেঘমেদুর পরিবেশ তৈরি করা ঘূর্ণিঝড়ের মিগজাউম নামটি মিয়ানমারের দেওয়া। এটি একটি বার্মিজ শব্দ।

গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মিগজাউম ঘূর্ণিঝড় থেকে লঘুচাপে রূপ নিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তখন এটি ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন ওডিশা এলাকায় অবস্থান করছিল। আর মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবীর গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশা করছি, রাতের মধ্যে বৃষ্টির পরিমাণ একেবারেই কমে যাবে। ভোর থেকে বৃষ্টি না-ও থাকতে পারে, থাকলেও খুবই সামান্য। তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। এই মেঘ দু-এক দিনের মধ্যে সরে যাবে। মেঘ কেটে যাওয়ার পর শীত বেড়ে যাবে।’

এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ শুক্রবার সারা দেশের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে। আর আগামীকাল শনিবার তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবীর আরও বলেন, সূর্যের আলো না থাকায় সারা দেশের তাপমাত্রা কমে গেছে। দু-এক দিন পরই শীতের আমেজ জেঁকে বসতে পারে।

এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়া আবহাওয়া স্টেশন ছাড়া সারা দেশেই গতকাল বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে যশোরে, ৯৬ মিলিমিটার। একই সময়ে ঢাকায় ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বৃষ্টি না হলেও গতকাল তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে, ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ২ ডিসেম্বর নিম্নচাপে এবং পরের দিন গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় ধেয়ে আসে। রূপ নেয় মিগজাউম নামের ঘূর্ণিঝড়ে। এখন ঘূর্ণিঝড়টির বিদায়ের মাধ্যমে প্রকৃতিতে শীতের আগমন ঘটছে।