রাজধানীতেও দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার এলাকা মধ্যরাত থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত থাকে পাইকারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর। কিন্তু ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিপাতে আজ তাতে ছেদ পড়েছে। সকাল সাড়ে ছয়টাছবি: আবু তাহের সোহেল

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাতে দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আজ সোমবার ভোর থেকে এ অবস্থা শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় স্থান থেকে ঝোড়ো বাতাস ও বর্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতকাল রোববার বিকেল ও সন্ধ্যা থেকে বাগেরহাট, ভোলা, পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এতে মুঠোফোনের চার্জ হারিয়ে অনেকে হয়ে পড়েছেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ঢাকা থেকে গ্রামে থাকা স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে না পাড়ার কথাও প্রথম আলোকে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন।

বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসে ছেদ ঘটেছে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে। ঢাকা, ২৭ মে’২৪, সকাল সাড়ে ছয়টা
ছবি: আবু তাহের সোহেল

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার রাতে উপকূলে আঘাত হেনেছে। রাত আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে থেমে থেমে আসা দমকা বাতাসের সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি হচ্ছে। এতে এখানকার কাঁচাবাজারের পাইকারি সবজি ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকেই সবজি কেনা-বেঁচা রেখে বিভিন্ন ভবনের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেককে ভিজে ভিজে কাজ করতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরাঞ্চল চরকলাতলীয় বাসিন্দা মো. লোকমান হোসেন আজ সকাল সাড়ে ছয়টায় বলেন, তাঁদের ঘরে গতকাল দুপুর থেকে পানি। এতে পরিবারের সদস্যরা ঘরের পাটাতনে আশ্রয় নিয়ে আছেন। শেষ রাতের দিকে পানি একটু কমে আসলেও সকাল ৯-১০টার দিকে জোয়ারের পানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তাঁর ধারণা। তিনি জানান, তাঁর সাতটা গরু রয়েছে। এগুলো পানিতে ভেসে আছে। এর শেষ কি তা তিনি জানেন না। তাঁর ভাষায়, ‘আল্লাহ রাখলে রাখব, না রাখলে কি করুম’। এক প্রশ্নের জবাবে লোকমান হোসেন বলেন, তাঁদের চরে দুটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। তবে লোক অনুপাতে অত্যান্ত অপ্রতুল।

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা সদরের বাসিন্দা ছানাউল্লাহ আজ ভোররাত সাড়ে চারটায় প্রথম আলোকে জানান, সেখানে ভোররাত ৪টা থেকে প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পাশাপাশি সবার ঘরের নিচতলায় খাল ও নদীর পানি প্রবেশ করেছে। তিনি জানান, তিনি এর আগে কখনো এই এলাকায় এ ধরনের বন্যার পানি দেখেননি।

আরও পড়ুন

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতায় সেখানকার তিনটি নদীতে জোয়ার প্রবাহিত হয়েছে। বরগুনা সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সেখানকার দুটি এলাকায় বাঁধ ভেঙে ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।