আগামীকাল বিসিবি নির্বাচনে বাধা নেই

সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ পরিষদে কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলামের ১৮ সেপ্টেম্বরের চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্থগিতই থাকছে। তফসিল অনুযায়ী, বিসিবির নির্বাচন আগামীকাল ৬ অক্টোবর।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল। শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আজ রোববার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।

আজ শুনানিতে রিট আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী বিসিবির নির্বাচন স্থগিতের আরজি জানান। আদালত বলেছেন, ‘নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দিচ্ছি না। নির্বাচন হওয়া উচিত। নির্বাচন হোক।’

বিসিবির সাধারণ পরিষদে কাউন্সিলর মনোনয়নের ফরম বাতিল করে নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থা বরাবর চিঠি দেন। এ চিঠির বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ ২২ সেপ্টেম্বর রুলসহ আদেশ দেন। বিসিবির সভাপতির ১৮ সেপ্টেম্বরের চিঠির কার্যকারিতা অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করে। সেদিনই বিকেলে চেম্বার আদালতে তা শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে সেদিন চেম্বার আদালত আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, শুনানি ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হলো।

এর ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি নিয়ে সেদিন স্থগিতাদেশ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান থাকবে উল্লেখ করে আজ (রোববার) শুনানির জন্য দিন রাখেন আদালত। চেম্বার আদালতের আজকের কার্যতালিকায় বিষয়টি শুনানির জন্য ১১ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ।

অন্যদিকে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস ও আইনজীবী কায়সার কামাল শুনানিতে অংশ নেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।

বিসিবির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান।

তফসিল অনুয়ায়ী, বিসিবির নির্বাচন আগামীকাল সোমবার।

পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচিত ২৫ জন পরিচালকের মধ্য থেকে বোর্ড সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। বিসিবির সাধারণ পরিষদের সদস্যরাই (কাউন্সিলর) পরিচালক পদের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

প্রথমে কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৭ সেপ্টেম্বর। পরে সময় বাড়িয়ে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা করা হয়। এর মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র (২০২৪ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী সাধারণ পরিষদের কাউন্সিলরের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন প্রসঙ্গে’ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয়/জেলা ক্রীড়া সংস্থা বরাবর বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের সই করা চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। আগের ফরম বাতিল করে বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলরের নাম পাঠাতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

ওই চিঠির বৈধতা নিয়ে এ বি এম মনজুরুল আলমসহ চারজন কাউন্সিলর (১৮ সেপ্টেম্বরের আগে মনোনীত) ২২ সেপ্টেম্বর রিটটি করেন। সেদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলামের ১৮ সেপ্টেম্বর সই করা চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে; যার ওপর শুনানি নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। এই স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে উল্লেখ করে হাইকোর্টে এ-সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য পাঠানোর কথা বলেছেন চেম্বার আদালত।

আজকের আদেশের ফলে বিসিবির সভাপতির ১৮ সেপ্টেম্বর দেওয়া চিঠি বহাল থাকল বলে জানিয়েছেন বিসিসির আইনজীবী মাহিন এম রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। ফলে ১৮ সেপ্টেম্বর দেওয়া চিঠি বহাল থাকল। আগামীকাল বিসিবির নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই।