চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: পাল্টাপাল্টি মিছিল, ছাত্রদল সভাপতির বাসার সামনে ‘ককটেল বিস্ফোরণ’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় চবি শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেসের’ একটি মিছিল নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিল।

গতকাল সকালে ক্যাম্পাসে আনন্দমিছিল করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন। তবে বহিরাগতদের নিয়ে এই মিছিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শোকের মাস আগস্টে আনন্দমিছিল করার প্রতিবাদে রাতে পাল্টা মিছিল করে ছাত্রলীগের ‘ভার্সিটি এক্সপ্রেস’ উপপক্ষ।

ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা–কর্মীরা রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে জড়ো হন। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে ২ নম্বর গেট এলাকার দিকে যান। মিছিলে নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী। পথেই ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিনের বাসা পড়ে। ওই বাসার কাছাকাছি এসে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা স্লোগান দেন। এ সময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

ককটেল বিস্ফোরণের সময় আলাউদ্দিন বাসায় ছিলেন না। এ বিষয়ে জানতে আলাউদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, শোকের মাসে ছাত্রদল আনন্দমিছিল করেছে। এটি খুবই দুঃখজনক। এর প্রতিবাদে পাল্টা মিছিল করেছে ছাত্রলীগ।

প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, মিছিল থেকে নেতা–কর্মীদের কেউ কেউ বিক্ষুব্ধ হয়ে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন। তবে তিনি ককটেল বিস্ফোরণ হতে শোনেননি বলে দাবি করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। এর একটি পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর এবং আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। ২টি পক্ষ আবার ১১টি উপপক্ষে বিভক্ত। ভার্সিটি এক্সপ্রেস নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

‘বহিরাগতদের’ নিয়ে মিছিল

গতকাল সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ঝটিকা মিছিল করে। প্রায় অর্ধযুগ পর ক্যাম্পাসে ছাত্রসংগঠনটির এটি প্রথম কোনো কর্মসূচি। তবে এ মিছিলে অংশ নেওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন বলে দাবি করেন ছাত্রদলেরই একাধিক নেতা-কর্মী।

চবি ছাত্রদল সূত্রে জানা যায়, ‘ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের হামলার ভয়ে’ প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা দেননি আলাউদ্দিন। ক্যাম্পাসে যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি সাধারণত প্রশাসনিক ভবনের সামনে, মূল ফটক বা শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়। তবে ছাত্রদলের এ মিছিল হয়েছে ২ নম্বর ফটক থেকে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ এলাকায়।

মিছিলে অংশ নেন চবি শাখা ছাত্রদল কর্মী মোহাম্মদ আরিফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিছিলে কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী ছিলেন। বেশির ভাগ ছিলেন বহিরাগত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের মিছিলে বহিরাগত নিয়ে আসা লজ্জাজনক। মিছিলে গিয়ে আমি বিব্রত হয়েছি।’

ছাত্রদলের মিছিলে বহিরাগত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেন সভাপতি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবার কর্মসূত্রে আমি ক্যাম্পাস এলাকায় বসবাস করি। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হাটহাজারী সরকারি কলেজসহ আশপাশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমার সমর্থক রয়েছেন। তাঁরা মিছিলে এসেছিলেন।’