‘ব্রয়লার মুরগি খাওয়া ছাড়তে হবে গরিবদের’

‘সপ্তাহে একবার মুরগি কিনতাম। এখন সেটারও দাম ২০০ টাকার ওপরে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে গরিবদের।’

ব্রয়লার মুরগি কিনতে বাজারে আসা ভ্যানচালক রাসেল মিয়া আক্ষেপ করে এসব কথা বলছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে মুরগি কিনতে এসে বেশি দাম দেখে ফিরে গিয়েছিলেন। এ সপ্তাহে এসে দেখেন দাম আরও বেড়েছে। বাচ্চারা প্রতিদিন সবজি খেতে চায় না। তাই বাজার ঘুরে ছোট মুরগি খুঁজছেন তিনি।

প্রতিনিয়ত ব্যয় বাড়ছে জানিয়ে রাসেল মিয়া বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে অল্প আয় হয়। ১৪ বছরের ছেলেটা গ্যারেজে কাজ করে। দুই ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে দুজনের আয় মিলিয়েও অভাব লেগেই থাকে। প্রতিদিন কিছু না কিছুর দাম বাড়ছে। অভাবের সংসারে এটা অনেক বড় ধাক্কা।’

নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের খাবারে মাংসের জোগানের জন্য কম খরচে মিলত ব্রয়লার মুরগি। মুরগির দাম বৃদ্ধির বাড়ার ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট বাজার, চকবাজার ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজার ঘুরে দেখা গেল, গত দুই সপ্তাহের তুলনায় মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ৫০ টাকা। বাজারগুলোতে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। অন্যদিকে সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।

বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। হাড়সহ গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা ও হাড়ছাড়া ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেশি। অন্যদিকে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০-১০০০ টাকা কেজিতে। আকারভেদে তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২৪০, রুই ১৮০ থেকে ২৫০ ও কাতলা মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের মুরগি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, মুরগির খাবার আর আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বাড়িয়েছেন খামারিরা। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে সবকিছু কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরায়ও দাম বাড়তি।