সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। চট্টগ্রাম, ০৮ সেপ্টেম্বর
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তর ও শিক্ষক ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় হেলে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৯ শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীদের ১৬ জনকে ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। অবশ্য উপাচার্য শিরীণ আখতার এ বাসভবনে থাকেন না। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছোট–বড় ৬৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ক্লাবেও হামলা চালান। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ দেখান। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা শিক্ষক ক্লাবের একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের গাড়ি ও শিক্ষক ক্লাবের আসবাব ভাঙচুর করেন।

এসব ঘটনার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানাতে আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য শিরীণ আখতার। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটবে আমরা ভাবতেও পারিনি। কী করে দু-তিন শ ছেলেমেয়ে মাস্ক পেল, হাতে দা-কিরিচ পেল, আমাদের পরিবহনের গাড়িগুলো ভাঙল, শিক্ষক ক্লাব ভাঙচুর করল, উপাচার্যের বাংলো ভাঙচুর করল। এসব বিষয় আমাদের খুব অবাক লাগল। এগুলো ছাত্রসুলভ কাজ নয়। ছাত্ররা এ ধরনের কাজ করত পারে, তা আমার ধারণার বাইরে।’

এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আপাতত আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাই মিলে এসব তদন্ত করবেন। তিনটি মামলা হয়েছে আরও মামলা হবে। নিরাপত্তা প্রহরীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা আমাকেও করতে পারত। তাই এ বিষয়ে অ্যাটেম্প টু মার্ডারে মামলা হবে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখে এসব করা হবে। এখন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। প্রক্টর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।’

পরে মামলার বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। প্রক্টরের বরাত দিয়ে সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা প্রথম আলোকে জানান, মামলার বিষয়ে পরে সবাইকে (সাংবাদিকদের) জানানো হবে।

মামলার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমাদের সিনিয়র স্যারেরা বিবৃতি দেবেন।’

উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আবুল মনছুর, মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ, ইনস্টিউটিশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালক আবদুল্লাহ মামুন, ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী।

আরও পড়ুন

গাছের ধাক্কায় শাটল ট্রেনের ছাদে থাকা ১৫ শিক্ষার্থী আহত, উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর-আগুন