বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, ভোটের অধিকারসহ নানা বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে যেসব প্রতিক্রিয়া আসছে সেগুলো উপেক্ষা করা বোকামি বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। তাঁর মতে, সারা বিশ্ব যেভাবে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে, সেটা ইগনোর (উপেক্ষা) করা বোকামি। এসব প্রতিক্রিয়া অনেক বার্তা দিচ্ছে।
সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন শাহদীন মালিক। ‘আদিলুর-এলানের সাজা, সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজক নাগরিক ঐক্য।
সেমিনারে শাহদীন মালিক বলেন, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে করা বিভিন্ন আইনে কটাক্ষ, চেতনায় আঘাত, অনুভূতিতে আঘাত, মানহানি, ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এমন কিছু বললে ফৌজদারি অপরাধের বিধান রাখা হচ্ছে। অথচ ১৮৫০ সালের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ থেকে বাদ দিয়েছে। কারণ, এগুলোর অপপ্রয়োগ হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এখন ১৮০০ সালে ফিরে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, একটা দেশে গণতন্ত্র আছে কি না, আছে তা বোঝা যায় চেতনায় আঘাত, অনুভূতিতে আঘাত, মানহানি, কটাক্ষ, ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মতো ‘কারণে’ ফৌজদারি অপরাধ হয়ে থাকলে।
রাষ্ট্র এখন কিছু লোকের লুটপাটের যন্ত্র, টাকা বানানোর প্রতিষ্ঠান এমন অভিযোগও করেন শাহদীন মালিক।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে খাদ্যের, জীবনের, স্বাস্থ্যের কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার।
দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা আদিলুর ও নাসিরের সাজার রায়ে স্পষ্ট বলে মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
সরকার যেসব আইন করে তা নাগরিককে নয়, সরকারকে ক্ষমতায়িত করতে করা হয় বলে সেমিনারে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ।
সেমিনারে নাগরিক ঐক্যের পক্ষে একটি বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এই বক্তব্য পাঠ করেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, সরকার প্রতিহিংসা এবং শক্তি প্রদর্শনের জন্য বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে আদিলুর ও নাসিরের বিরুদ্ধে সাজার রায় দিয়েছে। অধিকারকর্মীদের কণ্ঠরোধ করতেই সরকার নিবর্তনমূলক মামলার এই রায় দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক ঐক্য।
পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে দলটি বলেছে, বিরোধী মত দমনে এ আইন বিপজ্জনক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।