বিএনপি নেতা আমানের জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই

বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানফাইল ছবি

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ১৩ বছরের দণ্ডিত কারাবন্দী বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে বিদেশে যেতে হলে তাঁকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ আদেশ দেন। দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পর জামিন চেয়ে আমানের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে আমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হুদা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

আদেশের পর আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রথম আলোকে বলেন, আমানউল্লাহ আমানকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে বিদেশে যেতে হলে তাঁকে আদালতের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন আদালত। জামিন হওয়ায় তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত বাধা নেই।

ওই মামলায় ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আমানউল্লাহ আমানের আপিলের ওপর পুনঃশুনানি নিয়ে গত বছরের ৩০ মে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রাখা হয়। এই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতের গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমানউল্লাহ আমানকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের ৭ আগস্ট হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বের আত্মসমর্পণের পর আমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আমানউল্লাহ আমান, সঙ্গে জামিন আবেদন ছিল। লিভ টু আপিলটি গত ৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত শুনানির জন্য লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। শুনানি নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। এরপর নিয়মিত আপিলের পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন আমান। শুনানি নিয়ে আজ আমানের জামিন মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ।

এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের ও সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের খালাস দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

পুনঃশুনানি শেষে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় গত বছরের ৭ আগস্ট প্রকাশিত হয়। এরপর আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান গত ৩ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পুনঃশুনানি শেষে তিন বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপিল করেন ও জামিন চান। শুনানি নিয়ে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত থেকে জামিন পান তিনি।