অবিবাহিত পুরুষের হার অবিবাহিত নারীর চেয়ে ১৩% বেশি

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

দেশে বিবাহিত পুরুষের চেয়ে বিবাহিত নারীর সংখ্যা বেশি। বিবাহবিচ্ছেদের পর একা থাকা, সঙ্গীর কাছ থেকে আলাদা থাকা আবার সঙ্গীর মৃত্যুর পর একা থাকার ক্ষেত্রেও পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। তবে অবিবাহিত নারীর চেয়ে অবিবাহিত পুরুষের হার ১৩ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপ ২০২৩–এ এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

৫ জুন বিবিএসের ওয়েবসাইটে জরিপ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবিবাহিত পুরুষের হার ৩৫ শতাংশের বেশি। অপর দিকে অবিবাহিত নারীর হার ২২ শতাংশের বেশি। পুরুষের মধ্যে এ হার সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম রাজশাহী বিভাগে, ৩১ শতাংশ। আর নারীর ক্ষেত্রেও এ হার সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩২ শতাংশ এবং রাজশাহীতে সবচেয়ে কম ১৮ শতাংশ।

নারীর চেয়ে পুরুষের একাধিক বিয়ে করার হারও বেশি। একবারের বেশি বিয়ে করেছেন এমন পুরুষের হার প্রায় ৪ শতাংশ, আর নারীর ক্ষেত্রে এটি ১ শতাংশের বেশি। বিপত্নীক হিসেবে ১ শতাংশের কিছু বেশি পুরুষ একা জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে নারীদের বিধবা হিসেবে জীবনযাপনের হার প্রায় ৯ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই জরিপের জন্য গত বছরের ২১ মে থেকে ২২ জুন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪০টি এলাকার ২ লাখ ৯৮ হজার ৭৩৪টি পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জরিপে বৈবাহিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে আরও বলা হয়েছে যে দেশে ৬৫ শতাংশ জনগোষ্ঠী বিবাহিত। এর মধ্যে বিবাহিত পুরুষের হার ৬৩ শতাংশ, বিবাহিত নারীর হার প্রায় ৬৮ শতাংশ। বিবাহিত জনগোষ্ঠীর হার রাজশাহী বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৯ শতাংশ এবং সিলেট বিভাগে সর্বনিম্ন ৫৫ শতাংশ। বহুবিবাহের হারও রাজশাহী বিভাগে সবচেয়ে বেশি, সিলেটে সবচেয়ে কম।

জরিপে পরিবারপ্রধান হিসেবে পুরুষের আধিপত্যের বিষয়টি উঠে এসেছে। জরিপ অনুসারে, দেশের ৮৬ শতাংশ পরিবারের প্রধান পুরুষ। আর ১৪ শতাংশ পরিবারের প্রধান নারী। শহর এলাকায় নারীপ্রধান পরিবারের হার সামান্য বেশি। বিভাগভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পুরুষপ্রধান পরিবারের হার রংপুরে সবচেয়ে বেশি, এ হার ৯২ শতাংশ। আর নারীপ্রধান পরিবারের হার চট্টগ্রামে বেশি, এ হার ২৪ শতাংশ।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পে সব তথ্য উঠে আসে না। এই প্রকল্পের আওতায় আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপের মাধ্যমে সামাজিক বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে আনা হয়েছে। আর্ন্তজাতিকভাবে এ ধরনের জরিপের চর্চা রয়েছে। বৈবাহিক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু উপাত্ত তুলে ধরেছি। কোন হার কেন কম বা বেশি, তা গবেষকেরা ভালো বলতে পারবেন।’