নাটোরে বিএনপির সমাবেশে হামলা ও মারধরের ঘটনায় মামলা, আটক ২
নাটোরে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবির সমাবেশে হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ জেলা বিএনপি আহ্বায়ক শহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে জখমের ঘটনার তিন দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। শহিদুলের স্ত্রী সুলতানা পারভীন বাদী হয়ে আজ শনিবার নাটোর সদর থানায় মামলাটি করেন।
ওই মামলায় নাটোর সদর আসনের (নাটোর সদর-নলডাঙ্গা) সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের ভাতিজা রাশিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে তাঁদের ৬৬ অনুসারীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি রেকর্ড করার পর রাসু (২৫) ও সবুজ (২৫) নামের দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে মাঠে রয়েছে পুলিশ।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে নাটোর জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ছিল। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সেখানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পৌঁছালে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের অনুসারীরা চায়নিজ কুড়াল দিয়ে শহিদুল ইসলামকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।
এলোপাতাড়িভাবে কোপানোয় তাঁর ডান হাতের কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গা মারাত্মক জখম হয়। এখন তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া সমাবেশে হামলা চালানোর কারণে সেখানে উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনসহ অন্তত আরও ছয় বিএনপি নেতা–কর্মী আহত হন।
মামলার বাদী সুলতানা পারভীন অভিযোগ করে বলেন, তাঁর স্বামী দলের জনপ্রিয় নেতা। তাঁর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও প্রাণনাশের চেষ্টা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। তিনি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান।
বিএনপির সমাবেশে হামলা ও দলীয় নেতা–কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শহিদুলকে যেভাবে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপানো হয়ছে, এটা দুঃখজনক। তাঁর চিকিৎসা নিশ্চিত এবং মামলার বাদী কে হবেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে মামলা বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওসি মিজানুর রহমান জানান, হামলায় যাঁরা সরাসরি জড়িত রয়েছেন, তাঁদের তথ্য-উপাত্ত পুলিশের হাতে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রকৃত অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হবেন।