ঢাকা কলেজে সাংবাদিক নির্যাতনে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

ঢাকা কলেজে সম্প্রতি দুই সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতাদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে সোমবার প্রতিবাদী অবস্থান করেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাসে সম্প্রতি দুই সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতাদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে প্রতিবাদী অবস্থান করেছেন কলেজটির কয়েকজন শিক্ষার্থী। অবস্থান কর্মসূচি থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্যাতনে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য কলেজ প্রশাসনকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে এই অবস্থান কর্মসূচি করেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অন্য পাঁচ দাবি হলো কলেজ ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ শহীদ ফরহাদ হলের সুপারকে প্রত্যাহার, মেধা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় প্রথম বর্ষ থেকে ছাত্রাবাসে বৈধ সিট নিশ্চিত করা, ‘গেস্টরুম’ ও গণরুম সংস্কৃতি নিষিদ্ধ করা এবং অছাত্রদের হল থেকে বের করে ছাত্রদের থাকার সুযোগ দেওয়া।

অবস্থান কর্মসূচিতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র আবু নাঈম নোমান। এতে বলা হয়, ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়মিত র‌্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন সাধারণ ছাত্ররা। বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অসংখ্য ছাত্র। এই ভয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে ওঠার সাহস করেন না। যারা ওঠেন, তারাও নেতা নামের কিছু ‘বড় ভাইয়ের’ হাতে দিনের পর দিন নির্যাতিত হয়ে আসছেন।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘দুই সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনার ছয় দিন পার হতে চলেছে। কিন্তু এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কলেজ প্রশাসন। তাদের হাত-পা কোথায় বাঁধা, যে তারা এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি? আমাদের এই প্রতিবাদ কোনো দল বা নেতারা বিরুদ্ধে নয়। আমরা প্রতিবাদ করছি গুটিকয়েক সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। ছয় দফা দাবি আদায় না হলে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কলেজের শিক্ষার্থীরা লাগাতার আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।’

গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে শহীদ ফরহাদ হোসেন ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্দেশে ‘গেস্টরুমে’ যেতে দেরি করায় ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও একটি অনলাইন পোর্টালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদকে মারধর করেন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। এ ঘটনার খবর প্রচার করায় পরদিন ছাত্রাবাসে ১৫ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ও আরেকটি অনলাইন পোর্টালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ওবায়দুর সাঈদকে। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে গত শনিবার রাতে ঢাকা কলেজের ৬ কর্মীকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ওবায়দুর সাঈদকে নির্যাতনের ঘটনায় ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা কলেজ প্রশাসন। জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, কমিটিকে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ ঘটনায় তাঁরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।