আ.লীগ কর্মীকে চড় মারলেন নদভী, ভিডিও ভাইরাল

সেতু নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করায় সংসদ সদস্য নদভী আওয়ামী লীগের ওই কর্মীর ওপর চড়াও হন।

আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী

সেতু নির্মাণে অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করায় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এক আওয়ামী লীগ কর্মীর ওপর চড়াও হন। তিনি তাঁকে চড় মারেন। গতকাল মঙ্গলবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দুই থেকে আড়াই বছর আগের।

ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী জসিম উদ্দিন লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরীকে ডলু নদের ওপর সেতু নির্মাণের অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করছিলেন। চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী ওই সেতু নির্মাণকাজের ঠিকাদার। সংসদ সদস্য নদভীর সঙ্গে তিনি সেতু পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। জসিম উদ্দিনের প্রশ্ন শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সংসদ সদস্য নদভী রেগে যান। তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘তরে আঁই ছোয়ার মারিয়েরে এহন’, (তোকে আমি চড় মারব এখন) বলে জমিসকে চড় মারেন। দ্বিতীয়বার চড় মারতে গেলে স্থানীয় একজন আওয়ামী লীগ নেতা নদভীকে নিবৃত্ত করেন। এ সময় নদভী জসিমকে ক্রমাগত শাসাতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আঁই মানুষ কি গরম ন জানস? এব্বেরে এইল্লা এইল্লা জিয়াতা গাড়ি ফেইল্লম দে ধরিয়রে।’ (অর্থাৎ আমার মাথা কী রকম গরম জানিস তুই? একেবার ধরে এমন করে জ্যান্ত পুঁতে ফেলব।)

ভাইরাল ভিডিওতে থাকা মাদার্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী জসিম উদ্দিন এই সেতু নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অনেক তদবির করেছেন। নিজের পকেটের টাকা খরচ করেছেন। সে কারণে সংসদ সদস্য সেতু নির্মাণকাজের পরিদর্শনে এলে জসিম অনিয়মের কথা তুলে ধরছিলেন। তবে ফল হয়েছে উল্টো।

জানতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী মো. জসিম উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে গেছি, বিভিন্ন নেতার ডিও লেটার নিয়েছি এবং টাকাপয়সাও খরচ করেছি। ওই সেতু নির্মাণে অনিয়মের কথা বলছিলাম ঠিকাদারকে। এতে এমপি হঠাৎ রেগে গিয়ে চড় মারতে উদ্যত হন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ নিয়েও অকথ্য ভাষায় কথা বলেছেন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিওটি প্রায় পাঁচ বছর আগের। একটি পক্ষ পুরো ভিডিওটির কিছু অংশ দীর্ঘদিন পর ছেড়েছে। ওই সময় চাঁদাবাজ জসিম উদ্দিন সেতুটি নির্মাণের ঠিকাদার লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বাবুলকে মারতে যান। স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আমি তাঁকে শাসন করেছি।’